তুমি যখন থাক দশতলার উপরে
আমরা তখন থাকি ধুলায় লুটিয়ে গায়ে,
তুমি যখন নিচে আসো নেমে
আমরা তখন পিষ্ঠ হই তোমার পায়ের তলে।


তুমি যখন শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে
থাক পরিবার পরিজন নিয়ে,
আমরা তখন জৈষ্ঠের খররৌদ্রে
সিদ্ধ হই খোলা আকাশের নিচে।


তুমি যখন নরম বিছানায় শুয়ে
ডুব দাও কল্পনার মাঝে,
আমরা তখন মাটিতে পিঠ দিয়ে
বাস্তবতাকে জড়িয়ে রাখি বুকে।


জীর্ণশীর্ণ শরীর নিয়ে
আমরা যখন কঠিন পরিশ্রম করি,
তখন তুমি শুয়োরের মতন শরীর নিয়ে
আমাদের মাথার উপর ঘোরাও ক্ষমতার ছড়ি।


তুমি যখন আহার করো মিঠাই,
পোলাও-কোরমা আর মদের বোতল নিয়ে,
আমরা তখন শুষ্ক খাবার খাই
আমাদের রক্ত আর ঘামে ভিজিয়ে।


আমরা যখন আমাদের ন্যায্য পাওনা
দাবি করি তোমার কাছে,
তুমি তখন কর নানা বাহানা
কৌশলে আমাদের ঘোরাও তোমার পিছে পিছে।


তুমি পাহাড় সমান সম্মান অর্জন করে
থাক হিমালয় সমান দালান-কোঠায়,
অথচ তুমি তোমার নিচের স্তরের মানুষকে মানুষ মনে না করে
দাও হীনমন্যতা সম্পন্ন এক ঘৃন্য পশুর পরিচয়।


তুমি অনেক বড় হতে পারো
কিন্তু, তোমার মধ্যে নেই কোন মানবতা,
সর্বদা স্বার্থপরতার বলিরেখা তোমার মুখে আঁকা থাকে
আর দুঃসময়ে ভুলে যাও নিজের আপনজনেরও কথা।


তুমি আমাদের দিকে চেয়ে দেখো
কি পরম মমতায় জড়িয়ে রেখেছি সবাই সবাইকে বুকে।
হতে পারে সম্মান, মর্যাদা, ঐশ্বর্য্য আমাদের নেই কারো
তবে ভালোবাসা, বিবেক আর মনুষ্যত্ব নামের ঐশ্বর্য্য আছে আমাদের মাঝে।


তোমাদের ভালোবাসা, বিবেক আর মনুষ্যত্ব
অর্থের উপর ভিত্তি করে প্রকাশ পায়,
আর আমাদের ভালোবাসা, বিবেক আর মনুষ্যত্ব
সবার মাঝেই উদ্বাহু নৃত্যে গান গায়।


আমাদের যা আছে তোমার তা নেই
যদিও আমরা তোমার কাছে মানুষ বলে বিবেচিত নই;
তবুও মনে রেখ রাত কেটে দিন এক সময় আসেই
তখন পৃথিবী আবার সূর্যকে অভ্যর্থনা জানায়।