শহড়ের দক্ষিন দিকে
হাইরোড ছেড়ে একটু বামে
সেই ল্যাম্পপোষ্টটা এখনো দাঁড়িয়ে আছে
অন্ধকারকে আলোময় করে।
দিনের বেলাতেও ল্যাম্পপোষ্টটাকে
দেখা যায় ঠিক এই খানে,
এটা তো কোন অশরীরির আত্না নয় যে
হাওয়া হয়ে যাবে দিনে।
যদি অশরীরির আত্নাও হতো
তাহলেও তার চোখ থেকে
একটু হলেও জল গড়াত,
রাত্রের পৈশাচিক সব কান্ড দেখে।
গভির রাতে নিয়নের আলো
যখন পুরোপুরি ছড়াতে পারে না কুয়াশার জন্য
তখনই আসে মেয়েগুলো,
পেটের হায়েনাগুলোকে হত্যা করার জন্য।
এক হায়েনাকে হত্যা করতে
নিজেদেরকে তুলে দেয় অন্য হায়েনাদের হাতে,
তারপরেও দরকষাকষি হয় তাদের মাঝে
নিষ্প্রভ এই ল্যাম্পপোষ্টটার সামনে।
নিষ্প্রভ চোখে ল্যাম্পপোষ্টটা তাকিয়ে থাকে
হায়েনাদের উজ্জ্বল চোখের পানে,
আর উঁচুদরের সব মানুষদেরকে
ধিক্কার দেয় ক্ষনে ক্ষনে।


পলকহীন চোখে হঠাৎ করে
চমকে ওঠে কার যেন স্পর্শে,
তারপর তাকিয়ে দেখে
এক মাতাল যুবক তাকে হেলান দিয়ে বসেছে।
যার মা এখনো বারান্দায় পায়চারি করছে
ছেলের ফেরার পথের পানে তাকিয়ে,
অথচ সেই ছেলে এখানে বসে আছে
যন্ত্রনাময় মৃত্যুকে হাতে নিয়ে।


তারপরেই দেখা যায়
নিষ্ঠুর চেহারার কিছু লোককে,
শীতল বাতাস মনে হয় লেগেছে তাদের গলায়
তাই মৃদু শিস উঠেছে তাদের ঠোঁটে।
কেউ জানুক বা না জানুক
ল্যাম্পপোষ্টটা ঠিকই জানে
সকালেই কাতর হবে কিছু লোক
দেয়ালে এদের রক্তেমাখা হাতের ছাপ দেখে।


কিছুক্ষন পরেই ল্যাম্পপোষ্টটা আবার দেখে
কিছু খাকি পোশাকধারি পুলিশকে,
মানুষের শান্তির রক্ষি হয়ে
আজ তারাই শান্তি ভঙ্গ করছে পথে পথে।
যেখানে তাদের থাকার কথা
শান্তির পতাকা হাতে নিয়ে,
সেখানেই তাদের পদধূলি পড়ে না
পদধূলি পড়ে রাস্তায় শুয়ে থাকা কিছু মানুষের বুকে।


এই শহড়ের বুকে প্রতি রাতেই
ফুটে ওঠে একই দৃশ্য,
তাউ দিনের বেলায় সকল ভালো দৃশ্যই
ল্যাম্পপোষ্টটাকে করতে পারে না স্পর্শ।
যখনই সে পৃথিবীর বুকে আলো দিয়ে
অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়,
তখনই পরাজয়ের অন্ধকার এসে ঘিড়ে ধরে
তাই তাকে নিশ্প্রভ আলো ছড়াতে হয়।