ভাবছি একটা বিদ্যালয় তৈরি করবো
নাম দেব, ‘পাপের কর্মফল।’
যারা পাপ করেছে তাদের ছাত্র করে নেব
আর শিক্ষক বানাবো, যারা এদের পাপের কারনে হয়েছিল অশ্রুসজল।


দেশে আছে কোটি কোটি মানুষ
তার মাঝে আছে কিছু মানুষ ভিন্ন,
এই দেশে যারা ভিন্ন মানুষ
তার বেশিরভাগ মানুষই পাপকে করে ধন্য।


এই সব ভিন্ন অন্ধ মানুষই
নিজের স্বার্থে মেতে উঠেছে,
স্বার্থের একটু ব্যাঘাত ঘটলেই
নিজেকেও চেনে না নিজে।


ভাবছি এইসব মানুষদেরকে
নতুন করে নতুন শিক্ষায় শিক্ষিত করব,
আমার গড়া বিদ্যালয়ের ভিতরে
সব বিদ্যা হাতে-মুখে শেখাবো।


প্রথমেই শুরু করব দেশের সব চাপাবাজ নেতাদের দিয়ে
সবগুলোকে ধরে পাঠাবো কৃষক শিক্ষকদের কাছে,
পরম মমতায় তারা শেখাবে
দেশের মাটিকে ভালোবাসতে হয় কিভাবে।


যতসব চোর-জোচ্চর আছে
পাঠাবো গৃহস্থ শিক্ষকদের কাছে,
তারা সবগুলোকে ঝুলাবে গাছের ডালে
সংসার টানতে তাদের কত কষ্ট হয় তা বুঝিয়ে দেবে।


যতসব পকেটমার আছে
তাদেরকে পাঠাবো বোকা-সোকা শিক্ষকদের কাছে,
কান টেনে, চুল ছিড়ে বুঝিয়ে দেবে
ভাড়া দিতে গিয়ে পকেটে টাকা না পেলে কেমন লাগে।


কৃষকের ঘাস কাটার কাস্তে
তুলে দেব মেয়েদের হাতে,
সব লুইচ্চা, বদমাইশদের ধরে ধরে
দেয় যেন মাথা ন্যাড়া করে।


সন্ত্রাসীদের ধরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে
সন্ত্রাস দ্বারা আক্রান্ত শিক্ষকদের কাছে,
নকল ছুরি, পিস্তল তাদের উপর ব্যাবহার করে
বুঝিয়ে তখন সাধারন মানুষের কেমন লাগে।


যতসব বদমেজাজী শিক্ষক আছে, পাঠিয়ে দেবো তাদেরকে
বেতের ভয়ে যারা অকালে ঝরে গেছে, সেই শিক্ষকদের কাছে
পিঠে আর হাতে দশটা বেতের ঘা দিয়ে বোঝাবে
স্নেহ ছাড়া পড়াশোনা হয় না এভাবে।


যতসব সুদখোর আছে
পাঠাব শ্রমজিবী শিক্ষকদের কাছে,
আসলের সাথে সুদের টাকা দিতে
বোঝাবে, ঘাম ঝরে কতখানি শরীর থেকে।


আছে যত ঘুষখোর অফিসার
পাঠাব জীবন যুদ্ধে পরাজয়ী এক শিক্ষকের কাছে,
বোঝাবে, ঘুষ দিলে তার সংসার
কত অসহায় হয়ে পড়ে।


******         ******


সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায়
তবুও ভাবনার হয় না শেষ,
স্বপ্নের মাঝে বহুদূর চলে যাই
সেখানেও হয় না ভাবনার শেষ।


শুয়ে শুয়ে থাকি একা
আর ভাবি, বলবই এবার সবাইকে সব কথা,
কিন্তু কে শোনে কার কথা
সারাদিন খাই শুধু বকা-ঝকা।


মাঝে মাঝে সবাইকে
ডেকে আনি কাছে,
বলি, তোরা কি পড়েছিস ‘কারক’-এ
‘ভাবনা’ও কাজের মধ্যে পড়ে।