আকাশলীনা
জীবনের ছকগুলো সব সাদাকালোই থাক না, ক্ষতি কি তাতে ?
নগ্নসত্যগুলো আর একবার ঘেঁটে দেখা যাক না, ক্ষতি কি তাতে ?
কালবৈশাখীর ঝড়ে দেখনি কি তুমি মৃত্যুর নৃত্য ?
হোক না তবে বোঝাপড়া, হোকনা মুখোমুখি, ক্ষতি কি তাতে ?

আকাশলীনা
ঈশ্বরের রঙে রঙিন থাকার অভিলাষ বারংবারই ছিল তোমার
স্বপ্নে বিভোর রথযাত্রীর মত, অতি-অতি বেগুনীরশ্মি ।
ধবল চিলগুলো যখন আকাশ ছুঁইছুঁই করে,
মেঘের নিঃসঙ্গতা অনুভব করে,
ঈর্ষা কি করনি কখনো ?

আকাশলীনা
পুরুষের উষ্ণ আলিঙ্গনে থর-থর কেঁপে যখন
তুমি খোঁজ ভালবাসার সংজ্ঞা,
আমার অধিপতিরা তখন রক্তিম উল্লাসে উদ্ভাসিত।
কবিরা যখন ''বুলেট কিংবা কবিতা''র তর্কে মাতোয়ারা--
আমি খুজি-- তোমার হিম রক্তে নিস্পন্দ-স্পন্দনে হাহাকারের দীর্ঘনিঃশ্বাস ।

আকাশলীনা
তুমি জীবনানন্দের পরকীয়ায় লিপ্ত নারী নও;
তোমার বাসর আর সহবাস তো অন্যায়ের পাঁজরে।
স্বাধীনতা নামক নিকৃষ্ট এক হারামির বন্দিনী তুমি--
তুমি দাসী--- তুমি রক্ষিতা ।
স্বাধীনতা-- স্বাধীনতা -- স্বাধীনতা -------
মহাশূন্যে ছাড়িয়ে যাক এই চিৎকার,
নিঃসঙ্গ মেঘও কি করবে কোন প্রতিবাদ ??

আকাশলীনা
চলো না, মাটিতে পোঁতা কাঁটাতারের মত
আকাশেও কিছু রেখা টেনে দেই;
ভাগ করে নেবো আকাশটাকে---
তুমি আর আমি ।
থাকবেনা কোন অধিপতির হস্তক্ষেপ ।
বুভুক্ষ শিশুগুলোর জলন্ত লাশ দিয়ে
উল্লাসের ক্যাম্পফায়ার করবো, ওই মুক্ত আকাশতলে ।
ভয় নেই, কোন বিচার হবে না,
মানবাত্মা কেঁপে উঠবে না কোন ।
সবই তো মৃত, শুধু হিম নিস্পন্দ স্পন্দন ।

আকাশলীনা
চলো না, স্বাধীনতা নামক বেজন্মাটাকে গলা টিপে হত্যা করি।
চলো না, স্বাধীনতার খুলিটা দিয়ে জয়মাল্য দেই আমার অধিপতিদের।
চলো না, স্বাধীনতার রক্তের প্রবাহে উষ্ণ স্নানে মেতে উঠি।
বিশ্বসংসার তোলপাড় করে জানিয়ে দেই,
আলিঙ্গনে উষ্ণ আমি, তুমি আমার ।

তবুও ঘুচবে না কিছুই,
ঠিক ঠিক বিচারটিও হবে না,
মানবাত্মা কেঁপে উঠবে না কোন ।

সবই কবর, নিঃসঙ্গ শ্মশান কিংবা সাহেবের গোরস্থান-----
শুধু হিম নিস্পন্দ স্পন্দন ।