১.
দীর্ঘরাত এখন আমার কাছে নিষিদ্ধ
ঘুমহীন অনার্থক জেগে থাকা যেন অভিশাপ
নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই
শূন্যতা বাঁধদেয় সংশোধনে,
ক্লান্তি বন্দি জ্বলন্ত দু'চোখের ভিতরে
সেখানে চাইলে তুমি যখন তখন ফোঁটাতে পারো অর্কিড
ভালবাসার জল ঢেলে নিবাতে পারো উত্তাপ ।


২.
মাঝে মাঝে কিছু স্মৃতি এলোমেলো করে দেয়,
দূর আকাশে যেন লেগে আছে কষ্টের দাঁগ,
হরেক রকমের জমে থাকা অদ্ভুত কিছু অতৃপ্তি
সন্ধ্য থেকে উস্কানি দিয়ে বলে একা কেন?
আমি কিছুই বলতে পারিনা ।


৩.
রাস্তায় পড়ে ছিলো দেয়াসলাই কাঠি
কুড়িয়ে আগুন জ্বালালাম একটুকরো কাগজে
নিমিষে ছাঁই হলো পুড়ে গেলো ।
সে আগুনের ততটুকুই জ্বালাবার ক্ষমতা
টুকরো কাগজের সীমা যতটুকু ।
অথচ তোমার ভালবাসার আগুন অসীম
সে আগুনের লেলিহান শিখায়
আজন্ম দগ্ধ মন-মনন-দেহ ,
হৃদয়ে জ্বালিয়েছো প্রণয়ের বহ্নিশিখা
এত জ্বলি ছাঁই হইনা তবুও ।


৪.
কখনো কবির কবিতার কাল্পনিক চরিত্র হয়ে,
অথবা অচেনা বোকা কোন রমণীর
চুপসে যাওয়া মনের হঠাত্ প্রণয়ে,
কিংবা কোন নির্ঘুম রাতের হিংস্রতার পরে
ক্লান্ত ভোরের আলো হয়ে বারবার,
বহুবার বহুরূপে খোলশ পালটিয়ে
তুমি আসবে আমার কাছে, তোমাকে আসতেই হবে ।


৫.
আমি এই নিষ্প্রান নগরিতে অচেনা অতিথী
পথের বাঁকে একাকীত্বের বলিদান হই
চার দেওয়ালের ভাঁজে লিখে রাখি
অপ্রকাশিত অজস্র কবিতার কয়েক চরণ ।
আমি শূন্য থেকে গড়া কোন এক ঘুড়ি
যে আকাশে উড়ি তার বিশালতায় বন্দি
নাটাই হাতে আছে একজন সন্তর্পনে
মাঝে মাঝে শুতোয় টান পড়লে ফিরে আসি
ফিরে আসতে হয় ।


৬.
রাত আমার সব নিয়েছে কেড়ে
বড্ড ভয় হয় সন্ধ্যা ফেরিয়ে রাত এলে
প্রত্যেক রাত এখন আমার কাছে বিষাক্ত,
টিক টিক শব্দে রাত গভির হয়
বিষ ছড়িয়ে পড়ে দেহের শিরায় প্রশিরায় ।
কি যে যন্ত্রনা !
ঘুমাতে চাই, আমি ঘুমাতে পারিনা ।


৭.
আকাশের প্রজ্জলিত জেগে থাকা তারদের কথা বলিনি,
বলিনি জোছনা রাতে ঘোর অন্ধকারের কথা,
একাকীত্বের হিংস্রতায় বিক্ষত হৃদয়তো চুপই,
অস্থিরতার দেনা পাওনার হিসেবের কথাও বলিনি,
শুধু বলেছি ভালবাসি ভালবাসি,
সে বলাটাই যেন আজন্ম পাপ,
যেন মানুষ হত্যার অপরাধ সম ।


৮.
ভেতর থেকে নাড়া দিলো জাগ্রত কিছু অবিসার,
আমি অচিন পথের একলা পথিক,
দিনের শেষে শূন্য বৃত্তেবন্দি অতিত,
অগোছালো জীবনে হেঁটে যাই অজানায়,
এ পথের শেষ কোথায়?


৯.
জানালা খুলে আকাশ দেখো,
আমার নির্বাসিত দুঃস্বপ্নের হাহাকার আছে,
জোছনার আলোতে মিসে আছে অপূর্ণতার ছাপ,
তুমি নেই বলে স্মৃতির হাতে হচ্ছি বলিদান,
তিলে তিলে গড়েছি কষ্টের প্রাচীর,
সবটুকু উড়িয়ে দিয়েছি দহনভরা আকাশে..


১০.
অবশেষে নিজের সক্রীয়তা অচেনা কিছু,
আমাকে নতুন করে চিনতে চাইনা
যা পাইনি তা অপূর্ণই থাক
আর কখনো পূর্ণ হতে চাইবো না
কাঙ্ক্ষিত নিয়তি খেলা করুক
অগোছালো জীবনের মাঠে-ঘাটে-প্রান্তরে ।


১১.
একটা কবিতা ছিলো এই অন্ধকারে,
একাকীত্বের হিংস্রতার কষাঘাতে  
টুকরো কাগজে হয়েছিলো কালির অপচয়,
মলাটে নোংরা খাতার এককোনে
সযত্নে জায়গা করে দিয়েছি,
তাতে ছিলো ভিষণ বানান বিভ্রম,
হয়তো কবিতা বলা চলে না ।
আজ বেশ সময় ফেরিয়ে চোখ মেলে দেখি,
চারিদিক অন্ধকার,
আধাঁর আছে, কাগজ সাদা,
কালি কিংবা কোন কবিতা নেই ।