রেল ইস্টিশনের পুরাতন বেঞ্চীতে
অপেক্ষার প্রহর
গুনতে গুনতে আমি ক্লান্ত ।
ক্লান্তি হার মানে প্রকৃতির
কাছে,
পূবের আকাশ দেখা যায় সামনেই,
সারি সারি উচু পাহাড়
সবুজে সজ্জিত ।


অপেক্ষা অতীব বিরক্তিকর,
কখন সে আসে মহেন্দ্রক্ষণ
তার অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ
কোথায় কে যেন কবে বলেছিলো
অপেক্ষার বিরক্তিকর বঞ্চনার চেয়ে মৃত্যই শ্রেয় ।


একটু পাশেই চলছে গুনীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান,
সঞ্চালকের কি কর্কষ কন্ঠ মাইকে বাজে
নিশ্চয় রাজনীতিতে নতুন
এখনও গুছিয়ে মিথ্যা বলা শিখেনি ।


তবে গুনীজনকে সম্মান করা উচিত সর্বদাই ।


যে সমাজ গুনীজনকে কদর করেনা,
সম্মান দেয়না,
সে সমাজে গুণীজন সৃষ্টি হতে পারেনা,
যে গুণীদের সম্মান দিতে জানে
যে সভ্যতার মর্যাদাশীল
ব্যাক্তি ।
গুণীজন ব্যাক্তিরা সহসায় জন্মায় নাহ,
একজন গুণীজন ব্যাক্তি অজস্র ত্যাগ তিতিক্ষা
নিরলস পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে
নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেন ।


একটি চা খাওয়া দরকার
কাছের দোকানটিতে দুধ নেই চিনি আছে
তবে রং চাই খাওয়া যায় ।


লোক গুলো সব আমার দিকে তাকায়,
কোতুহল তাদের চোখে মুখে,
সেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত
রেল ইস্টেশনের ওয়েটিং বেঞ্চী বসে আছি,
একটু কোতুহল তো থাকবেই ।


সহসায় সন্ধ্যা নেমে এলো পূবের আকাশে
আকাশ রং বদলায়, ধূসর লাল আরো কত কি !
পাখিরা ঘরে ফিরে যায় লেজ নাড়িয়ে
আস্তে আস্তে ইস্টেশন হয়ে যায় মানুষ শূন্য ।
সবাই চলে যায় যে যার মত,
কেচ কেচ আওয়াজে বন্দ হয়
শস্তা চায়ের দোখান,
ইস্টেশন গার্ড বসে ঝিমায় একটু পরেই ঘুমাবে -


আমার অপেক্ষা তবু পুরায় নাহ !
ইচ্ছে করে বৃক্ষের মত
দাড়িয়ে থাকি
আমার হাত পায়ে শিকড় গজাক
ডাল পালা বেড়ে উঠুক অনিমেষে
তুমি আর একবার আসো একটিবার,
এসে সে বৃক্ষের বিজ বুণে দিয়ে যাও


তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকতে থাকতে
আমার মাথার চুল মাটি স্পর্শ করুক,
দাড়ি গোফে ঢেকে যাক ক্লান্ত শরীর,
নখের ভিতর নোংরা জমুক ।


আমি আজো অপেক্ষায় আছি,
তোমাকে আসতেই হবে হে প্রিয়তমা ।


অতঃপর সম্মুখে দেখি ঘোর অন্ধকার
চারিদিকে রাত্রি নামে আধাঁরে আধাঁরে
কয়েকটি কুকুরের বিষাক্ত আহাজারি,
তারাও হয়তো জেগে থাকবে নিষ্প্রাণ নগরীতে,
আমি এখনো সেই বেঞ্চীতে বসে আছি,
তুমি এলে না, আজো এলে না ।