আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি
হায়নার হাতে খুন হওয়া নির্মম কোন স্মৃতি
আমার মস্তিষ্কে নেই ।


যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ব্রিজ-কার্লভাট
সম্ভ্রম হারানো কোন নারীর পঁচা দেহ
জ্বালিয়ে দেওয়া ঘর বাড়ির ছাঁই
কিংবা বধ্যভুমিতে কোন মুক্তিযোদ্বার গুলিবৃদ্ধ করোটি
আমার চোখে পড়েনি ।


রেড়িওতে স্বাধীন বাংলা বেতারের গান
রাজপথে স্বজাতীর সাহসি স্লোগান
প্রিয়তমাকে ছেড়ে যুদ্ধে যাওয়ার গল্প
কোন মায়ের যুদ্ধে যাওয়া সন্তানের অপেক্ষার গল্প
ধর্ষিতার কাতর চিত্‍কার, আমি শুনিনি ।


স্কুলের ফকির স্যার বাংলা পড়াতো
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বলতো, বুঝতাম না কিছুই
ভাবতাম কখন ছুটি হবে !
ছুটি হলে ঘরে ফিরে ব্যাগটা পেলে
সহপাঠিদের সাথে ডাংগুলি খেলতাম,
সন্ধ্যায় মায়ের কাছে পড়তে বসতাম
ভিটিবিতে সিন্দাবদ কিংবা আলিফ লায়লা দেখতাম
মায়ের হাতে খেয়ে, মায়ের সাথেই ঘুমাতাম ।
ঘুম ভাঙলে শীতের সকালে চুলার পাশে
মায়ের হাতের পিঠা খেতাম, সাথে বোনের বকাও ।
আবার স্কুল, জাতীয় সংগীত
ফেরার পথে সবুজ শ্যামল গ্রাম দেখে ভাবতাম,
এটাই বোধ হয় বাংলাদেশ ।


তখন বুঝিনি বাংলাদেশ শব্দের পিছনে
কি অসহ্য নির্মম বর্বরতা লুকিয়ে ছিলো ।
তিরিশ লক্ষ প্রাণ আর দু লক্ষ সম্ভ্রমে
লাল সবুজে খচিত মানচিত্রের নাম বাংলাদেশ ।


এখন বুঝতে শিখেছি, বড় হয়েছি
শহীদের রক্তের ঋণ শোধ হবার আগে
শকুনের থাবার ভয়ে মুখোশে মুখ লুকাই ।


দেশটাতো মায়ের মত, দেশটাই মা
ক্ষমা করে দিও মা ।