অদ্য এ-হেনক্ষণে প্রেয়সী
       ওই অন্তরীক্ষ 'পরে
লক্ষাধিক তারকারাশি
        হরষে মিটিমিটি করে!
   হেরি আজ ওই উদার নীলে
  শ্বেতাম্বুদ যায় পাল তুলে,
রজতআলোকবরষণধারা
       আজও মেদিনীতে ঝরে!
হতাশ হইয়া যখন হায়
       সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের আছে সকলই
       শুধু তুমি আজ নাই!


শান্ত বায়ের বক্ষ চিরে
       আজও বিবিধ বিহগ--পাখি
যায় যে উড়ে পুলকে মেতে
       মেলে কোমল তীর্যক আঁখি!
   আজও প্রসূণঘ্রাণ অনুভবি বায়
   পুলক দানি যায় যে নাসায়!
আজও বিহঙ্গম সোনালী-রূপালি
      আলোক নেয় গায়ে মাখি!
হতাশ হইয়া যখন হায়
      সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের আছে সকলই
      শুধু তুমি আজ নাই!


আজও খেচরের মিষ্ট কাকলি
      কর্ণেতে মোর বাঁধে বাসা,
আজও শ্রবণি পক্ষীশাবকের
      মায়ের প্রতি অস্পষ্ট ভাষা!
   শ্রবণি আজও শত কলরব
   হরষে মাতি যা শুনি সব--
প্রকৃতির পানে হেরি আঁখে
      যা জাগে মোর আশা!
হতাশ হইয়া যখন হায়
     সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের সকলই আছে
     শুধু তুমি আজ নাই!

প্রসূণ-বাগে আজও বসে
      ভ্রমরের বিস্তৃত মেলা,
উঠে মধুর গুঞ্জনতান
      হয় মধু-মধু খেলা!
   আজও তরুর মর্মরধ্বনি
   পুলকে মাতি যাই শ্রবণি,
অনুভবে ধীরে ধীরে হায়
    কাটে মোর জীবনের বেলা!
হতাশ হইয়া যখন হায়
    সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের আছে সকলই
    শুধু তুমি আজ নাই!


আজও নদে তরঙ্গশিশু
      দু'পাড়ে আসি আছড়ে পড়ে,
আজও নদীর কুলকুলধ্বনি
     হরষকে মোর দেয় যে গড়ে!
  হেরি তটিনী যায় যে ছুটি,
  দু'পাড়ে ঢেউ পড়ে লুটি
এতকিছু হেরায় পরে হায়
     অন্ত:করণ মোর নড়ে!
হতাশ হইয়া যখন হায়
     সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের সকলই আছে
    শুধু তুমি আজ নাই!


ভাবতে তোমায় কাটে বেলা
     চিন্তাক্ষ্মাতে মোর সদা ঠাঁই,
এতকিছু থাকার পরও
     মনে হয় মোর কিছুই নাই!
  ভাবি স্মরণীয় আতীতের কথা,
  চাপিয়া ধরি হৃদয়ের ব্যথা!
কোন ঠিকানায় আছো গো তুমি
     কী করে বল গো যাই!
হতাশ হইয়া যখন হায়
     সর্বত্র সচকিতে তাকাই
হেরি আগের আছে সকলই
     শুধু তুমি আজ নাই!


-:::-:::-:::-:::-:::-সমাপ্ত-:::-:::-:::-:::-:::-


12ই পৌষ,1423