শীতের রাত ধোঁয়া ধোঁয়া চলেছি গাঁয়ের পথে ;
আঁধার ভুবন নিঃশব্দ নিঝুম ঝিঁঝিঁ ডাকে।
গা ছমছম ডাক এসেছে দেশের কাজে।
চলেছি একলা নদীর ঘাটে বাঁধা ছিল তরী
অন্দরে যাই আশ্চর্যচকিত আটজন
ছিল যাত্রী।
সবাই মোরা ঘোর বিপ্লবী স্বাধীনতা
পেতে চাই ;
মরণমারণ মন্ত্রে দীক্ষিত দর্পে এগিয়ে যাই।
চলিল তরণী নিঃশব্দে শুধু দাঁড়ের আওয়াজ
শোনা যায় ;
থামিল এক অট্টালিকার পাশে
দারোয়ানে বাঁধিয়া যায়।
অন্দরে দেখি অপার আঁধার আগ্নেয়াস্ত্রের
শব্দ ;
শুনে কাঁপে বুক পালাই বাহিরে রাস্তা
করি লক্ষ্য।
হঠাৎ এলো সর্দারজী আমারে আদেশ করে ;
ফিরে যাই তাই অন্দরের গেটে
মহাজন লুটিয়ে পড়ে।
বিপ্লবীরা লোটে অত‍্যাচারীর ধন আগ্নেয়াস্ত্রের তরে;
লড়তে হবে ইংরাজের সনে মাতৃমুক্তি পণে।
হোথায় মাদল বাজে ঝুমুর তালে
ধিতাং ধিতাং বোলে
সাঁওতাল পল্লীতে বাঁধনা পরব হবে।
ছিল এক পোড়ো বাড়ি বিপ্লবীদের আস্তানা ;
না জানিত কেহ না করিত কেউ
সেথায় আনাগোনা।
সেদিন রাতে চাঁদের হাসিতে
ছড়ায় রূপালী আলো;
মলয় বাতাস কি জানি কি বলে
কালো মেঘে ঢেকে গেল।
ভোর হলো যবে ইংরেজের সেনা
পোড়ো বাড়ি ঘিরে ধরে ;
বিপ্লবী সেনা মহারণ করে ইংরেজ
আগুন বোমা হানে।
আসে সাঁওতাল লয়ে তীর ধনু বরষে
বৃষ্টির মতো ;
ইংরেজ শাসক মূঢ় হয়ে যায়
হতবুদ্ধির মতো।
মহারাজ তাই আদেশ করিল
"আত্মগোপন কর";
তাই বিপ্লবী ভূপেন ঘুরিয়া ঘুরিয়া
কোলিয়ারী চলে এলো।