ধরো হঠাৎ কখনো সন্ধ্যা নেমে এলে,
তুমি জানালায় মুখ রেখে
করুণ শহরের আলো যখন মাখাবে শরীরে
আমাকে দেখতে পাবে বিষণ্ণতার ভিড়ে
আমি হয়ত হাঁটছি, হাঁটছি, নিঃশব্দে হাঁটছি,
অতি নিঃশব্দ,
ল্যাম্পপোস্টের মৃদু আলোয় চিনবে আমাকে
গায়ে হয়তবা ন' বছরের সেই পুরোনো শার্ট দেখে,
কিংবা হতচ্ছিন্ন রঙ হারানো পাঞ্জাবী হলে,
বুঝে নিও আমিই সেই,
আমিই সেই পুরোনো বাউণ্ডুলে


অথবা ধরো
তেতে ওঠা মধ্যদুপুরে তুমি ব্যস্ত রাস্তায়,
একটু নিঃশ্বাসের জন্য
স্থির দাঁড়িয়ে আছো কোনো নিরালায়,
হঠাৎ করে দেখবে আমাকে,
শত সহস্র মানুষের ঝাঁকে,
তুমি মুহুর্তে চিনে যাবে
আমার কাঁধে জীবনযৌবনের বোঝা।
আমি তখনো হাঁটছি যেন চিরজীবনের পথিক,
আমার গন্তব্য অনন্তের দিক,
অপার সমুদ্রের দিক,
যার শেষ নেই শুরু নেই,
শুধু দৃষ্টির সীমানা আছে,
আছে আমার মত অক্লান্ত পথিক
নষ্ট লগ্ন কেটে গেলে,
আমার উদভ্রান্ত দৃষ্টি যদিবা তোমার চোখে রাখি,
বুঝে নিও আমিই সেই,
আমিই সেই পুরোনো বাউণ্ডুলে।


আবার কখনো যদি তুমি,
তোমার প্রিয় নদীটির খোঁজে যাও,
অজস্র প্রিয় বাতাস
মুঠো ভরে নেবে বলে দু বাহু বাড়াও,
দেখো সেই বিশুদ্ধ আকাশের ছায়ায়,
বিমল বাতাসে,
নির্মল মৃত্তিকায় গজিয়ে ওঠা নরম ঘাসে,
আমি বলে কে একজন হাঁটছে, হাঁটছে, নিশ্চিন্ত পায়ে,
নিস্তব্ধ গাঁয়ে,
মুহুর্তেই চিনে যাবে তুমি,
পরিচিত অবয়ব আর বিমূর্ত পটভূমি,
আনমনে ভেবে নেবে,
ওর কি আর ঘরবাড়ি নেই তবে?


আমি হয়ত উত্তর রেখে যাবো
প্রিয় সেই নদীটির কাছে,
বাউণ্ডুলের কি ঘর থাকতে আছে?