শুধু ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতেই
কেটে গেলো কতগুলো বছর,
কত বিনিদ্র রাত,
কত কাকডাকা ভোর,
কত স্নিগ্ধ গোধূলি,
কত মধ্যদুপুর।
তবু আজ শূন্যতার মাঝে আমি,
স্থান হয়নি কোনোখানে,
সময়ের চিরবিদায় এর দায় নিয়ে
ছুটে চলি ঠিকানার সন্ধানে।

এইসব খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে একদিন,
ভেবেছিলাম আমিও এদের মতই মানুষ, চির রঙিন,
ভুল ভাঙিয়েছিল কেউ একজন,
দেখি আমি স্বচ্ছ জলের মতই রঙহীন,
এ আমার ঠিকানা নয়,
এখানে কোথাও নেই আমার পরিচয়।

কিছু ভবঘুরের দলে ভিড়ে
হারাতে চেয়েছিলাম পাহাড় নদী সাগরে,
নিস্তব্ধ সবুজের মাঝে ডুবে
পাখপাখালির নগরে,
নদীর জল আমাকে গ্রহণ করে নি,
পাখিরা গান থামিয়ে দিয়েছিলো,
নিস্তব্ধ সবুজের মাঝে সূর্য আমাকে দেখেনি,
ভবঘুরের দল উধাও হয়ে গেছে।

একদল বিদ্রোহীর সাথে
বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলাম এরপর,
দ্রোহের অনলে দগ্ধ করে অন্তর,
প্রতিজ্ঞা শপথে অটল, অনড়,
অথচ বিদ্রোহে গিয়ে আওয়াজ আসেনি,
যেন সিংহনাদ এর নিচে চাপা কাপুরুষের কন্ঠস্বর।
বিদ্রোহ দমে গেছে অনেক আগে,
আমি আজও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে আছি।

হন্যে হয়ে খুঁজতে খুঁজতে শেষে,
আশ্রিত হলাম কিছু প্রেমিকের মাঝে, প্রেমিকের বেশে,
হৃদয় উন্মুক্ত করে দিয়ে বলে দিলাম,
এসো প্রিয়া, তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি,
কেউ তো আসেনি কোনোদিন,
আমি আজও তাই ঠিকানাবিহীন।

ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতেই হায়,
দিন, মাস, বছর চলে যায়,
আমি হাজার গন্তব্যের ভিড়ে,
গন্তব্যহীন হয়ে সময়ের তীরে,
ক্লান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে থাকি অপলক,
এ প্রকাণ্ড মহাবিশ্বের মাঝে,
আমি ঠিকানাহীন ব্যর্থ এক যুবক।