সিজোফ্রেনিয়া নামটা প্রথম শুনেছিলাম ছাত্র জীবনে।
মনের কোন এক অজ্ঞাত কোণে বাঁধা পরেছিলো নামটা।
জীবন সূর্য্য এখন মাঝ গগন থেকে বার্ধক্যের দিকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে।
ফেলে আসা অতীতের সাথে, না পাওয়ার স্বপ্নগুলো মিলেমিশে তৈরী করেছে এক অলিক জগত।
সমাজের তীক্ষ্ণ আঁচরে ক্ষতবিক্ষত পথিক,
আলোর সন্ধানে পথ হারায় মনের অন্ধকার গলিতে।
সেখান থেকে সুরু হয় কল্পনার রাজ্যের পথ চলা।
আসলে সত্যি বা মিথ্যা বলে কিছুই হয় না।
পাঁচজন মানুষ অবলীলাক্রমে যেটাকে মিথ্যা বলে মনে করে,
কিছু মানুষের কাছে সেটাই সত্য, এক অন্যরকম সত্য, কল্পিত সত্য!
বাস্তব জগতের মত কল্পনার জগতের অস্তিত্ব আর বিশ্বাসের ছত্রছায়ায় বেঁচে থাকা কল্পনার সংসারের নাম, সিজোফ্রেনিয়া।
কল্পনার জগতে প্রিয় জনকে হারাবার ভয় নেই, না পাওয়ায় যন্ত্রনা নেই।
নেই বিচ্ছেদ, নেই আক্ষেপ, নেই হতাশা,
নেই শাসকের নীতি, শোষনের জ্বালা, আইনের বেড়াজাল।  
মোবাইলে চোখ রেখে কারো মেসেজের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়না এখানে।
মেসেজটা তার কাছে গেলো কিনা, সে পড়লো কিনা, পড়ে খারাপ কিছু ভাবলো কিনা, ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে ফোনের অপেক্ষার উদ্বেগ নেই এখানে।
নেই প্রিয়জনকে দেখার জন্য দিনগোনা, নেই চিন্তা, নেই আফসোস।
এখানে শুনতে হয়না ব্যস্ততার অজুহাত।
এক অনন্ত অব্যস্ত জীবনের নাম সিজোফ্রেনিয়া।
কল্পনার রাজ্যে সম্পর্কের মধ্যে নেই কোন শর্ত, নেই প্রতিমুহূর্তে কুরে কুরে খাওয়া একাকিত্বর তীব্র দংশন।
এখানে যা কিছু আছে সব নিজের ইচ্ছেমতো।
সবাই যে যার ইচ্ছার মালিক।
কল্পিত সত্যের অবগুণ্ঠনে খোঁজ মেলে-
কল্পনায় মধ্যে বেঁচে থাকার অধিকার।
অলীক বাস্তবতায় ডুবে থাকার আনন্দ।
প্রয়োজন হীন প্রিয়জনদের সান্নিধ্য।
ভালোবাসার মানুষকে পাসে পাওয়ার তৃপ্তি।
নিজের মত চলার ছন্দ।
সিজোফ্রেনিয়া তাই আমার কাছে কোন রোগের নাম নয়,
রোগগ্রস্ত সমাজ থেকে মুক্তির উন্মাদনা।