একদিন পুতুলের বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল বলে খুব কেঁদেছিলাম, শামুকের মত মাটিতে লেপ্টে থেকেছিলাম
খুব হাসতো কেউ, খুব মজা করতো সখিনার মা
আমি আরো অভিমান বাড়িয়ে নিতাম, আরো চিৎকারে বুক ফাটাতাম;
অতঃপর মা এসে বিভিন্ন ইনুনি বিনুনি করে ভুলিয়ে দিতো,
পুতুলের সাথে আরেকটা বিয়ে পড়ার আশ্বাস দিতো।


একদিন কানামাছি খেলায় নেয়নি বলে
কাউকে খেলতে দিইনি, কাউকে উঠোনে রাখিনি
রাগে সব ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলাম;
ধীরেধীরে মা বাঁশ বাগানের গান, চাঁদ মামার কবিতা শুনিয়েছিল,
কালকে মা নিজেই কানামাছি খেলবে বলে ঘুমিয়ে দিতো!


ঠিক একদিন নিজ হাতে শাক তুলে চিংড়ি মাছ রান্না করেছিলাম, খতি ভাত রান্না করেছিলাম
পরক্ষণে সখিনার হাসি আর ঠাট্টা করা দেখে সব ছুঁড়ে ফেলেছিলাম
রাগে, ক্ষোভে আর কোনদিন রান্না না করার স্বীদ্ধান্ত নিয়েছিলাম


একদিন বৃষ্টিতে ভিজতে চেয়েছিলাম, আইসক্রিম বিক্রেতার মাইকে শুনা কিছু লিমেরিক গান গাইতে চেয়েছিলাম;
কিন্তু সুর নেই বলে আর গান গাওয়া হলো না, সখিনা হাসবে বলে আর ভিজা হলো না;
অথচ আজ দেখি কত পুতুলের মন ভেঙে যায়, কত পুতুলের বিয়ে ভেঙে যায়
যৌবনের মধ্যাহ্নে চমৎকারভাবে গড়া জীবনের প্রাসাদ চুরমার হয়ে পড়ে,
কেউ আর সে পুতুলের সাথে বিয়ের আশ্বাস দেয় না, সেই পুতুলের মাটি ছাড়া আর কিছু জেগে উঠে না!


সেদিন আমি খেলেছিলাম অনুভূতির সাথে, কানামাছি কিংবা খতির সাথে
আর আজ আমি খেলি সমুদ্রস্নানে, বৃষ্টিজলে, রক্তিম আকাশে জেগে উঠা রংধনুর সাথে;
এরা আমার চিরদিনের বন্ধু, পরম ভালোবাসা।।