তোমার শীতল ওষ্ঠে আমার ঠোঁট না রাখার অপরাধে,সঙ্গমে পটু না হওয়ার দায়ে তুমি আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলে আস্তাকুঁড়ে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের কর্ণপাড়া ব্রিজের পাশে একটি কাগজের কার্টুনের ভিতর থেকে নবজাতকের উদ্ধার করা লাশের মতো অবস্থা ছিলো আমার।
একবছরে বারো লাখ এবোরশন করানো শিশুদের মতো অসহায় ছিলাম আমি।
আমার অসহায় আর্তনাদ,তীব্র হাহাকার,বক্ষপিঞ্জরের হাড় ভাঙ্গার শব্দ তুমি শুনতে পারোনি।
তুমি আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলে,
যেমনটা দিয়েছিলো গাইবান্ধার এক পাষন্ড বাবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্ত্রী সন্তান প্রসব করার অপরাধে নবজাতক শিশুকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছিলো।
আর তুমি আমায় ফেলে দিয়েছো কারন আমি তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তোমায় ভালোবেসে ছিলাম বলে।
এটা আমার অপরাধই বটে।
এত হাঙ্গামা করার পরেও তুমি পারোনি আমার দেহ থেকে কবিতার ক্ষত ছিন্ন করতে।


মিথস্ক্রিয়ার বড্ড অভাব ছিলো তোমার আমার।
দুজনেই চুম্বকের উত্তর মেরু হওয়ায়,
চুম্বনটা কোনোদিন আর হয়ে উঠেনি।
ঘোর লাগা কন্ঠে ঠোঁটে নেশা লাগানোর দাবি জানানো হয়নি।
কারন,চুম্বকের সমমেরুতে কোনোদিন আকর্ষন বল কাজই করে না!


তবে আমি আস্তাকুঁড় থেকে উঠে এসেছি,
তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখবো বলে
কারন আমি তোমাকে ভালোবেসেছি।
নাকি সঙ্গমে অপটু হওয়ার মতো সত্য ঢাকবো বলে,
শারীরিক ভাবে অক্ষম বলে,
কবি হিসেবে সক্ষম হতে চাচ্ছি?


তবে এত করেও শেষরক্ষা হয় না আমার।
এক নির্জন প্রহরে বিএসএফ সৈন্য বন্দুক তাক করে আমার বুকে,যে বুকে একসময় তুমি মাথা রেখে ঘুমোতে অনিচ্ছা প্রকাশ করতে,আমি অক্ষম ছিলাম বলে।
বন্দুক তাক করার কারন আমি তোমাকে খুঁজতে গিয়ে সীমান্তই পার করে ফেলেছিলাম।
তাও তোমাকে পাইনি,
কিন্তু আমার এই তীব্র হাহাকার,হিংস্র মুখোশধারী বিএসএফ সৈন্য বুঝতেই চায়নি।
পাষন্ড সৈন্য ট্রিগার চেপে দেয়ার আগমূহুর্তে যদি আমার চোখের দিকে তাকাতো,তবে বেশ অবাকই হতো।
কারন আমার দৃষ্টি শূন্য ছিলো।


আমার কোনো কবর হয়নি,জানাযা হয়নি।
আমার জন্য রথ আসেনি,খাটিয়া আসেনি,কফিন আসেনি।
আমার কেউ মুখাগ্নিও করেনি,শুধু বেয়নেট দিয়ে আঘাত করে মুখ রক্তাক্ত করে দেয়া হয়েছিলো।
আমার কোনো এপিটাফ ও ছিলো না,শুধু একরাশ শিমুল ফুল ছিলো আমার দেহের উপরে।
তাও রক্তাক্ত,দুর্গন্ধযুক্ত।
তবুও ফুল তো বটে।


অক্ষম মানুষকে এতটুকুই বা কে দেয় বলো?