হে কবি সাবধান,
ওরা ধর্মের নামে ব্যবসা করে শিক্ষা দেয় ভুল
নাই চরিত্র নামে নায়েবে রাসুল, ওরা ক্ষমতার জন্য গদির জন্য মন্দির ভাঙে
ভাঙে মসজিদ, হত্যা করে নিস্পাপ শিশু
ওরা পূজার নামে নিজের পকেট ভরে, বিক্রি করে খায় যীশু।
সত্য লিখতে পারি না কবি, সত্য লিখতে গেলে
কপালের মাঝ বরাবর বন্দুকের নল এসে বলে
মাদারের বাচ্চা সত্য লিখিস, মরার খুব সখ জেগেছে তোর।
সত্য লিখার সাহস হয় না কবি, সত্য লিখতে পারি না
চোখে দেখি কানে শুনি, মুখ বুজে সয়ে যাই সব
হাতের কলম কান্না করে, খাতা ভয়ে জড়িয়ে ধরে
কে জানি নিরবে বলে আমি বাঁচতে চাই
মনের ভাব প্রকাশ করলে ধরে নিয়ে যায় জেলখানায়,
চাইলেই লিখতে পারি না সব সত্য কথা, ধর্ষিত হওয়া নারীর না বলা মনের ব্যথা।
পারি, হ্যাঁ পারি, আমরা সবাই পারি
প্রেমিকাকে নিয়ে মনের আনন্দে লিখতে ছন্দে ছন্দে কবিতা
প্রেমিকার হাত ধরে শাহবাগের পথ হেঁটে
টিএসসির মোড়ে চায়ের দোকানে বসে চা খেতে, ফেসবুক কাঁপাতে
চাইলেই পারি না রাজপথে গিয়ে আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে,
রাজপথে নামলেই কপালের মাঝ বরাবর বন্দুকের নল এসে বলে
মাদারের বাচ্চা মরার খুব সখ জেগেছে তোর।
হে কবি সাবধান,
কী জানি এক আইন আছে এই দেশে
হায়! কী জানি এক আইন আছে এই দেশে
লিখতে গেলে ভাবতে হয়, ভাবতে ভাবতে পেঁকে যায় চুল
তবু শুধরে নেয় না কেউ কারো ভুল, যার আছে সে খাচ্ছে যার নাই সে দেখচ্ছে
তা দেখে চলে যাচ্ছে দিন, মাস, বছর।
হে কবি সাবধান,
পরে এসে ঘরে ঢুকে জয় জয় ধ্বনিতে সম্মানিত হয়ে সে যায় ফিরে,
ঘরের মানুষেরা দাঙ্গা করে মরে।
বন্ধ হয় না দুর্নীতি ক্ষমতাশীলদের অন্যায় অনিয়ম
আর এইসব নিয়ে যখনই কেউ কিছু বলতে যায়,
ঠিক তখনই কপালের মাঝ বরাবর বন্দুকের নল এসে বলে
মাদারের বাচ্চা মরার খুব সখ জেগেছে তোর।
হে কবি সাবধান,
তুমি কাদেরকে নিয়ে লিখো কবিতা?
কার হৃদয়ে এতো ব্যথা? কে বলে সত্য কথা?
কিসের লীগ কিসের দল কিসের হেফাজত, পার্টি
সব চোর শালারা নিজেদের পকেট করে ভারি।
একদল মন্দির ভাঙে আরেকদল ভাঙে মসজিদ
একদল চায় দেশের মঙ্গল আরেকদল করে দেশের ক্ষতি,
আর এসবের মাঝে তুমি আমি সাধারণ জনগণ
মুখ বুজে সয়ে যাই সব, সত্য লিখতে পারি না কবি, সত্য লিখতে গেলে
মৃত্যুর ভয় ছেড়ে দিতে হয়
বুকে ভয় থাকলে কবিতা লেখা মহাপাপ, মহাপাপ, মহাপাপ!