মা, তুমি কোথায় আছ?
কেমন আছ মা?
তোমায় আজো ভুলিনি মা।
ভুলিনি সেই দিনটির কথা,
যেদিন তুমি এই ছোট্ট বুকে
ঢেউ ভাঙা ঝড় দিয়ে
পাড়ি জমিয়েছিলে পরপারে।
সবার মুখে শুনেছিলাম তখন
আমি নাকি সাত, আট বছরে শিশু
তোমাকে বিদায়ের সাজে,
সাজিয়েছিল স্বজনরা।
খাটিয়া র পাশে শত জনতার ভিড়
মা, তুমি বেড়াতে বা ডাক্তারের
কাছে গেলে তো আমায় সঙ্গে নিতে,
সেদিন কেন নিলেনা মা?
তখন ও তো আমি ছোট ছিলাম।
জানো মা?
যখন শেষবারের মত,
তোমাকে দেখাচ্ছিল আমায়
তখন বার বার ইচ্ছে হচ্ছিল
পালকি বেয়ে উঠে আমিও তোমার
কোলের কাছে ঘুমিয়ে যাই,
সাদা কাফনের তলে।
কিন্তু আমার এই নিরব চিৎকার
কেউ শোনেনি মা,কেউ শুনেনি।
তবে একজন শুনেছে,
যার কাছে তুমি রওয়ানা দিয়েছ।
চার জন তোমার খাটিয়া নিয়ে যাচ্ছিল,
আর আমি তার পায়া টেনে
ধরে চিৎকার দিয়েছিলাম,
আম্মাকে কোথায় নিয়ে যাও?
কেন নিয়ে যাও?
আমারএ আর্তনাদে পাড়া পরশি
সবাই কেঁদেছিল!
শুধু তুমি কাঁদনি মা!
তবে আমি শুনেছি,
আমার কি হবে,এই ভেবে তুমি
অনেক কেঁদেছ,
হছপিটালের বেডে সুয়ে।
মা,তোমার যখন দাফন হচ্ছিল
আমার খুব ভাল মনে নেই মা,
হতে পারে হেলেনা
নামের কোন পরিচারিকা,আমায়
কোলে নিয়ে
কবরস্থানে গিয়েছিল।
একচাকা মাটি আমার হাতে দিয়ে
বলেছিল তোমার কবরে দিতে।
আমি দিয়েও ছিলাম।
সবাই মাটি চেপে দিয়ে ঘরে
ফিরছিল। তোমায় এভাবে একা
ফেলে ঘরে ফিরতে ইচ্ছে না
হলেও সবার সাথে আমাকেও
তখন ঘরে ফিরতে হল।
নানু, খালা সহ সজনদের ভিড়
তখন বাড়িতে
বাবা,ভাই,বোন, ছিল কতজন
তবুও আমি হয়ে গেলাম একা,
নিতান্তই একা।
প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছিল,
সবার চোখ ফাকি দিয়ে আমি
তোমার কাছে চলে যাই
তেমার কবরটা বুকে জড়িয়ে
সুয়ে থাকি অনন্তকাল।
দুঃখের জলে ভাসছি সেদিন
ভাবছি দু চোখ বুজে
কবর পরে থাকব সুয়ে
কেউ পাবেনা খুঁজে।