বাবা বলেছিলেন,
এবারের মৌসুমে ভালো ধান পেলেই একটা ফনিক্স সাইকেল কিনে দেবেন,
সাথে একজোড়া নতুন বাটা’র জুতো।
ধান ঘরে এসেছে,
বিক্রিও হয়েছে,
আমার বাবার ঘামে ফলানো সোনার ধান।
আমাকে আর বাবার কিনে দেয়া হয় নি বাটার নতুন জুতো জোড়া বা ফনিক্স সাইকেল।
অথচ ধানের রং আর আমার স্বপ্নেরা পাল্লা দিচ্ছিলো
পাকা ধানের রঙের সাথে,
স্কুলে গিয়ে নিতাই কে শুনিয়ে শুনিয়ে বাজাবো,
আমার বাবার ঘামের টাকায় কেনা ফনিক্স সাইকেলের বেল,
অথবা শুধু নিতাই কে দেখাতেই বারবার বেল্ট খুলে লাগাবো নতুন কেনা বাটা’র জুতোর।
বাটা জুতো কেবল মধ্যবিত্তের!
ওতে আর কেউ তেমন নজর দেয় না কেবল মধ্যবিত্ত ছাড়া।
আমায় বাবা শেষ বাটা’র জুতো দিয়েছিলেন গেলো ২ বছর আগে,
সেগুলো চিড়ে-ফেড়ে একাকার।
নিতাই গেলো সপ্তাহে ওর নতুন সাইকেল দেখিয়ে বলেছিলো,
“এই দ্যাখ,নতুন কিনেছি।নগদ আট হাজার টাকায়।“
কাছে ভিড়তে দেয় নি।
নিতাই কে বলেছিলাম,
“নিতাই,আমায় একটু চালাতে দিবি?”
নিতাই বলেছে, “কিনে চালাও বাপু,এতোই শখ হয় যদি।“
আমার খুব রাগ আর জেদ হয়েছিলো,
বাড়ি ফিরেই বাবার কাছে বায়না ধরেছি,
আমায় এবার একটা ফনিক্স সাইকেল কিনে দিতেই হবে।
বাবা চুল নেড়ে দিয়ে তো বলেই ছিলেন দেবেন।
ঈশ্বর আমার স্বপ্ন পূরণের সোনালী ধান দিলেন,
বিনিময়ে নিয়ে গেলেন বাবাকে।
আচ্ছা,ঈশ্বর তুমি এমন কেন?
সৃষ্টির সুখ তোমার অসহ্যই লাগে বরাবর,
কেড়েই নেবে যদি তবে কেন এই মায়া?
কেন এই কথা দেয়া?
কেনোই বা এই মেকি স্বপ্ন দেখা।