বিরক্তির একশেষ!
ঢুলতে ঢুলতে আমার কাঁধেই ঠেস্
দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল গেঁয়ো লোক!
ঘুমটা আরো একটু গভীর হোক,
আচমকা আমি সরিয়ে নেব কাঁধ,
হুমড়ি খেয়ে বুঝবে সে বজ্জাত,
কত ধানে ক'বস্তা হয় চাল!
দ্যাখো! দ্যাখো! গড়িয়ে পড়ছে নাল,
ইস্! ব্যাব্যাগো! ঘেন্নাপিত্তি নাই?
শখের জামা কী করে বাঁচাই?
দিলাম কষে মুণ্ডু ধরে ঠেলে,
ফ্যালফেলিয়ে তাকায় দু'চোখ মেলে!
না কামানো গালের খোঁচা দাড়ি,
গায়ের জামায় ফুটোর বাড়াবাড়ি।  
বাড়িয়ে গলা জানলা দিয়ে দ্যাখে,
মানুষ নাকি জন্তু বলব একে?
চমকে উঠে কচলিয়ে চোখ মোছে,
বলল যে, "আঁই! ভেদ্যে পেরিং গেছ্যে?"  
টানা কী এক হুঁশহীন ঘুম দিল,
ইস্টিশনে নামার কথা ছিল!
পেরিয়ে গেলে চেনা সে প্রান্তর,
পথভোলা লোক ফের হারাবে ঘর।
বাড়ি ফেরার ইচ্ছে সবার থাকে,
গোয়াল থেকে শ্যামলী গাই ডাকে,
‘বিন্তি’র মা গুড়ের ডেলা জোড়া,
চা'য়ে দিল... বাড়ন্ত শর্করা।
বর্ধমানে সারাদিনের কাজে,
নিজের ঘরের ইচ্ছে বুকের মাঝে,
রেখে, সীটে ক্লান্ত শরীর ঢেলে,  
ডাকার কথা ভেদিয়া চলে এলে,    
পাশের লোককে, বলবে ভেবে ভুলে,
ঘুমন্ত সে পড়েছিল ঢুলে।
আর এই আমি জামার কথা ভেবে,
ধাক্কা দিলাম, সে দায় কে আজ নেবে?
ডেকে তাকে কাছে নরম স্বরে
বলি, "আরে ঠিক ফিরবেন ঘরে,
আরেকটুক্ষণ ঘুমোতে পারবেন,
গুসকরা* এই ছাড়ল সবে ট্রেন!"
--------------------------------------------------------------  
*গুসকরা – বর্ধমান-বোলপুর রেলরুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এরপর আরো দুটি স্টেশন পেরিয়ে আসে ভেদিয়া।