আমি দেখেছি বাংলার ছায়ায় অশ্বত্থ-বটের ঝুরি
তাল-তমালে হিজল-পিয়ালে কত সুধা মনোহর
কেতকী শাখায় পাপিয়া-প্রণয় সুধাগন্ধ সুশোভন
কেয়া-কদম্বে বনানীর নীড়ে ঘিরে আছে নদীতীর।


বাংলা আমার পথের নিশানা আলোময় দীপশিখা
সুরমা যমুনা মেঘনা পদ্মা আছে যেথা হয়ে লীন
শঙ্খচিলের রূপোলী ডানা কাটে দূর আকাশের নীল
শত ঝঞ্ঝা সয়ে বারবার ফিরে চোখে স্বপ্নের দিন।


বুকের খাঁচায় যত্নে পোষা স্বপ্ন-সুখের পায়রা
হরষে মাতে, ফসলের মাঠে জাগে শত কলরব
যেমন, কিশোরীর বেণী দোলে সুরেলা বাতাসে
শাদ্বলভূমে চারিত রাখালিয়া ধেনুর উদ্বেল রব।


ঘুঙুর পরা নাঙ্গা শিশুর আনন-ভরা ফোকলা দাঁতের সুখ
ক্লান্ত মায়ের ঘামে ভেজা জীর্ণ আঁচল ছড়ায় স্নেহরাশি
ঝাপসা-আলোয় কিষাণের চোখে জাগে সূর্যের ঝিকিমিকি
অধরা স্বপন করতে আপন তাই বাংলায় ফিরে আসি।


কচুশাক আর পান্তা খেয়েও কত সুখের বায়না পুষি
তাই, মারি-মড়ক-খরার পরও বাংলাকেই ভালোবাসি।
____________________
⭐ কবিতাটি "বাইনারি সুখের পিদিম" (পৃষ্ঠা-৪২) কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত।