সমুদ্রের কাছে গেলে ওল্ড ম্যান সান্টিয়াগোর কথা মনে পড়ে, তবে খুব কম। সেই যে বড় ডলফিনটা মবি ডিক,  কিংবা রবিনসন ক্রুশোও সমুদ্র সাপেক্ষে বেমানান। সাতাশ বছর নির্জন দ্বীপে থাকায় কোন বাড়তি কৃতিত্ব অর্জিত হয় না।
সমুদ্র মানেই আমার কাছে সেই মৎস্যকুমার ইকথিয়ান্ডর। আহা, সে বেচারা ছিল বিষণ্ণ এক উভচর মানব। তার ছিল মানুষের ফুসফুস আর ডলফিনের ফুলকা। সমুদ্রেই থাকতো সে, ঘুরে বেড়াত অবাধে, কথা বলতো মাছেদের সাথে। ডাঙায় আসতো খুব কম।
একদিন নির্জন এক দ্বীপে ইকথিয়ান্ডর দেখলো সুন্দরী গুত্তিয়েরেকে। প্রেমে পড়ে গেল উভচর মানবটি। মেয়েটাকে একবার কেবল দেখার জন্য সময় সেই অসময় নেই, সে উঠে আসতো শক্ত ভুমিতে। এভাবেই অত্যাধিক ব্যবহারে তার ফুসফুস বিকল হয়ে যেতে থাকলো। গুত্তিয়েরেকে দেখার পরে সে আবার ফিরে পেত উদ্যম, ফের চলে যেত সমুদ্রে।
গুত্তিয়েরেকে চাইত এক ডাঙার মানুষও। সেই ক্রোধান্বিত পশুটির রোষানলে  একদিন ইকথিয়ান্ডরের ফুসফুস পুরোটাই অকেজো হয়ে গেল। সে আর মাটিতে থাকতে পারল না, মানুষ প্রাণীটার উপর এক সহস্রাব্দের ঘৃণা ছুঁড়ে দিয়ে এক বুক অভিমান আর প্রিয়সীর জন্য জন্মান্তরের ভালোবাসা নিয়ে সে ঝাঁপ দিল সমুদ্রে।
উভচর মানবটিকে  তারপর আর দেখা যায় নি। ওর কান্নার নোনাজলে সমুদ্র পুরোটাই লবণাক্ত হয়ে গেল।  সমুদ্রের ধার ঘেঁষে বসি। ইকথিয়ান্ডরের জন্য আমার কান্না পায়।