মোর প্রিয়ারূপ হেরি যবে আমি ফেরাতে না'রি দু'নয়ন,
বিধাতা কেমনে সৃজিলো তাহারে তা'ই ভাবি অনুক্ষণ।
তার ভ্রমরকৃষ্ণ বাঁকা আঁখি দেখি' হরিণী লুকায় বনে,
দীঘল রেশমি অলক নেহারি' মেঘেরা হিংসে মনে।
সলাজ হাস্যে টোল-পড়া গালে আহা কি গোলাপি আভা!
মেঘের আড়ালে মুখ ঢাকে শশী হেরি ও বদন-শোভা।
বছর জুড়িয়া পদ্ম-পলাশ ফুটিছে যুগল অধরে,
মুক্তোর দানাতুল্য দন্ত বিকাশে মুখবিবরে।
কুঞ্চিত কেশ ঢাকি' রহে তার শুভ্র ললাট-পাশ,
ভুল করি' ভাবি কস্তুরি মৃগ পাইয়া তনুর সুবাস।
ধানী-রং শাড়ি সোহাগে তাহার সোনার অঙ্গ জড়ায়,
মধুস্বর তার শুনিয়া কোকিল অভিমানে মূরছায়।
নাসায় তাহার শোভে গো নোলক, কর্ণে স্বর্ণদুল,
কন্ঠেতে শোভে মুকুতা-মালিকা, খোঁপায় রঙিন ফুল।
কোমল হস্তে রিনিঝিনি বাজে বেলোয়ারি কঙ্কণ,
অঞ্চল তার ল'য়ে নিশিদিন খেলে গো দখিনা পবন।
ক্ষীণ কটিতটে স্বর্ণমেখলা বিরাজে কি সুষমায়!
বাজে রুমঝুম রূপোর নূপুর আলতা-রাঙা দু'পায়।
সে কি নারী নাকি অপ্সরী তাহে ভ্রম হয় বারে বারে,
না জানি কি হেতু প্রেম দানিলো সে আমা' হেন
অধমেরে।