এক প্রাচীন মাতা ফোলা চোখ নিদ্রাহীন প্রহরায়
জমে থাকা জল ছলছল, রাখবে কোথায়?
এত বছরের এত নোনাজল, বয়েই যায়...
আরো কতকাল বয়ে যাবে?


আমার দু পাশে দুই কন্যা ঘুমায়
আমার রাজ্য, আমার দেশ।
আমি থাকি পাহারায়।


উড়ছে ক্ষমতা, বাতাসে কান
কেটে নিয়ে যাবে। মাথার খুলি উড়িয়ে দেবে।
সত্যের পথে সাধারণ অতি
টার্গেট, রক্তচক্ষু তোমার প্রতি।
শকুন আর শিয়ালের অবাধে বিচরণ
এ দল ও দল আর ক্ষমতার আস্ফালন।


শাড়ি তো উধাও। মাগো, আর নিতে পারছি না!
আমার চামড়া তুলে নিচ্ছে, বিভৎস
আসুরিক খেলায় মেতে উঠেছে ওরা।
চুপ শালী! চোখ তুলে নেব তোর!
বল, চোখে ন্যাবা হয়েছে তোর!


আমি অন্ধ হয়ে যাচ্ছি, বিশ্বাস করুন
আমি ঝাপসা দেখছি।
দুঃশাসনের উল্লাস আমার ঘুম কেড়েছে
মালদা থেকে মনিপুর...
পিংলা কিংবা মোরদাবাদে
ওদের বিবেক বিভৎস খাদে।
রাজসভা কি একই রকম চলবে?
যাজ্ঞসেনী কি বিবস্ত্র হতেই থাকবে?
ঝাড়গ্রামের সেই শিশুকন্যা
ফিরিয়ে দাও।
মাগো, আমাদের চেতনা দাও।


আমি মানচিত্র জানিনা, রাজনীতি বুঝিনা
আমার মাতৃত্ব শুধু চিৎকার শুনতে পাচ্ছে।
বাঁচার জন্য আর্তনাদ, আব্রু ঢাকার আর্তি।
এত দূর থেকে কান্নার শব্দ পাচ্ছি কি করে?
আমার আর রাজসভার উপর আস্থা নেই।
ওরা বলেছিল তিরিশ বছর অপেক্ষা করতে।
ওরা বলেছিল পঞ্চাশ বছর অপেক্ষা করতে।
আরো কত পঞ্চাশ বছর কেটে যাবে...
দুর্যোধনের আদেশ মান্য করতে
দুঃশাসনের জন্ম হতেই থাকবে...?


আমার দু পাশে দুই কন্যা ঘুমাচ্ছে।
আমার রাজ্য, আমার দেশ।
আমার বুকের ভিতর ঢিপঢিপ
আমি নিদ্রাহীন, আমি আতঙ্কিত
আমি ঘুমছুট, আমি চিন্তিত...
অপেক্ষা, শুধু অপেক্ষা
কখন আসবে সেই জ্যোতিপুঞ্জ, আঙ্গুলে থাকবে চক্র
এত চিৎকার, কান্নার কোলাহল ছাপিয়ে বজ্রকন্ঠ শোনাবে অভয় বাণী
"যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মনং সৃজামহ্যম্।।"