৹ যুদ্ধের সাত কাহন ৹ Rhyme: - Free Verse

যুদ্ধ মোটেই ভাল কিছু নয়।
কিন্তু কেহ ছাড়তে চাইলেও যুদ্ধ তাকে ছেড়ে দেয়
এমনটা হয় না।
কোনদিনই হতে দেখিনি।
কিছু না কিছু নিয়ে যুদ্ধ করাই মানুষের অভ্যাস।
যে যুদ্ধ করতে চায় না তাকে আমরা অলস বলি
নিষ্কর্মা বলি,দায়িত্বজ্ঞানহীন বলি।

যুদ্ধ না করলে কোন কিছুই ঠিকঠাক হয় না
মনোমত হয় না।
শুধুমাত্র ভাত-রুটি নয়
ইজ্জত কামাতে ও যুদ্ধ করতে হয়।
তাই না বাপ-মা কাঁচা ঘুম থেকে টেনেটুনে তুলে
বাচ্চাদের যুদ্ধের এ,বি,সি,ডি শিখতে পাঠায়।
গান শিখতে পাঠায়,ছবি আঁকতে পাঠায়
মায় জুডো ক্যারাটে শিখতে ও পাঠায়।

তবুও কেহ ঘরজামাই হওয়ার ট্রেনিং দেয় না।
কোন যুদ্ধে না জিততে পারলে
ঘরজামাই হয়ে বাঁচা,বাছার অন্তিম বিকল্প
তবে পিতামাতার জন্য বড়ই লজ্জার বিষয়।

এমনকি শুধু ঘরের বৌ হয়ে বেঁচে থাকার চেয়েও
যুদ্ধ করে বাঁচা এখন অধিক সম্মান জনক বিবেচিত হয়।
অতএব, কচি-কচি ছেলেমেয়েরাও এখন রোজ যুদ্ধ করে।
যুদ্ধবিদ্যায় ন্যূনতম পারদর্শিতা অর্জন না করলে
ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার হয়ে,ব্যাঙ্ক ম্যানেজার হয়ে
অথবা অন্য কিছু একটা হয়ে মা-বাবাকে নিশ্চিত করা যায় না।
ছোট-বড় যে কোন একটা সরকারি চাকরি পাকা হলে
বাছা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে এমনটাই ভাবা দস্তুর।

তবে কিনা এই যুদ্ধ জেতার প্রায় সাথে সাথেই
বাছা রা সংসার যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
মা-বাবা কালক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাস করে না।
বাছা কিছু একটা ভুলচুক করে ফেললে
তাঁদের আজীবনের তপস্যা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই আচমকা ই ওদের মরি মরি ভাব হয়।
শেষে চাপাচাপি করে বাছা কে রাজী করিয়ে ওরা যুদ্ধে জয়ী হয়।

ব্যাস,জোয়াল টা হেন্ডওভার হয়ে গেলে
আপাতত মা-বাবা নিশ্চিত হয়,তবে
এবার যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি কি হবে
ভেবে ওরা মনে মনে শংকিত থাকে।
বাছা দল বদল করতে পারে
বাছার ইচ্ছা-অনিচ্ছা বদলে যেতে পারে-
ইত্যাদি নিয়েই শংকা।
সংসারে কার কথার ওজন বেশী হবে
সংসার টা শেষে টুকরা-টুকরা হয়ে যাবে কিনা
এসব ভাবনা-চিন্তা আসতেই থাকে।
দূরে কোথায় বোম ফুটছে,মিশাইল উড়ছে
কত মরছে,আহত হচ্ছে,ঘরছাড়া হচ্ছে
ইত্যাদিও মাথায় আসলে
নিজে নিজ গৃহে নিরাপদ আছি,এমনটা ভাবা যায়।

© পলাশ কুমার রায়, ২০২৫

.