একটা ছোট্ট চিরকুট- উপেক্ষা আর ঘৃণায় কোন প্রস্তাবিত প্রেমকে  
অনিহা করতে করতে আবার এত ভালবেসে ফেলে যে একটা সাধের
জীবনও বিসর্জন দিতে এতটুকু বিচলিত হয় না সে হৃদয় অবেলায়।  
আবার একটা চিরকুট- এমনও হয় যে সারা জনমের প্রতিশ্রুত ভালবাসা
প্রেমকে মুহুর্তেই খুন করে হয়ে যায় আজন্ম ফেরারী। এমন করেই কোন
একটি চিরকুট হয়ে যায় অকাট্য বিচারিক দলীল, হয়ে যায় ইতিহাস।


বেশ মনে পড়ে প্রেম নিবেদনের জন্য কত দিন কত ইচ্ছা অনিচ্ছায়-    
সকালে কিংবা সন্ধ্যায় কিংবা রাত্রিতে শুভ বার্তার শুভেচ্ছায়,
রাত্রির খোলা আকাশ ভরা অথবা ভাংগা পূর্নিমার চাঁদ দেখতে দেখতে,
সকালের দুর্বা ঘাসে জমে থাকা শীতের শিশির মাড়াতে মাড়াতে
কখনও বর্ষায় একই বর্ষাতিতে জড়িয়ে তোমার উষ্ম ছোঁয়ায় এসে
কখনও ইচ্ছার বিরুদ্ধে তোমার ইচ্ছে আর স্বপ্নগুলোকে ভালবেসে
বুঝাতে চেয়েছি আমি কতটা ভালবাসি তোমাকে। কিন্তু তোমার সম্মতি
পেতে এক চিরকুটই রক্ষা করেছিল আমার উচ্ছন্ন প্রায় ভালবাসাকে।


আমি তোমাকে কাংখিত জেরার মুখে কোন ভালবাসার কাঠগোড়ায়
দাঁড় না করিয়ে যেন স্বশস্ত্র পুলিশি পাহারায় জেরার ভালবাসার সেলে
আটকিয়ে দুটি ছোট্ট প্রশ্নের একটি উত্তরের জন্য নিয়েছিলাম কোন
এক চিরকুটের আশ্রয়। তাতে লিখা ছিল আজ তোমাকে বলতেই হবে
তুমি আমাকে ভালবাস কিনা? সঠিক চিহ্ন দেবে যে কোন একটির
উপরঃ হাঁ বা না! এর পর কত দিন কত প্রেম, কত ভালবাসা, কত স্বপ্ন,
কত পাওয়া দিনের পর দিন ফুলিয়েছে আশার বেলুন। অথচ বিশ্বাসের
গোড়ায় একটি আলপিন, একটি শক্ত কাঁটা তৈরি ছিল সুক্ষ্ম আঘাতে
ছিন্ন ভিন্ন করতে প্রেমের দলীল যন্ত্রনার সাগরে ভাসাতে তা কে জানত!


তাইত কোন একদিন সে চিরকুট ভালবাসা প্রেম যতই হোক আদ্রিত,  
অযত্ন আর অবহেলায়  জঘন্য ইতিহাসের দলীলে তা হবেই নিন্দিতঃ
যদি সেখানে বিশ্বাসের চেয়ে আড়ালে বাঁধে বাসা সন্দেহের এতটুকু দানা,  
যদি সেখানে শ্রদ্ধার চেয়ে তলে তলে জন্ম নেয় অনুভূতির টুকরো ঘৃণা।
যদি সেখানে মায়ার টানের চেয়ে বেড়ে যায় দূরত্বের একাকী আকর্ষণ,
যদি সেখানে অল্পে তুষ্টতার চেয়ে কাংখিত হয় ঐশ্বর্যের ঘন আয়োজন।
তাই যেদিন তুমি অজানায় হারাতে সিঁথানে রেখে গেলে ছোট্ট এক চিরকুট  
সেই রাহুর দুষ্টেই আজও আমি লুডু খেলায় ছক্কার চেয়ে হয়ে রইলাম পুট।
আমার সাজানো বাগানে গোচ্ছিত প্রেম আর ভালোবাসারা হল হরিলুট!  


০২ নভেম্বর,  ২০১৯।