কবি এবং কবিতাকে ভালবেসে যারা কবির
আত্মীয় হয়ে উঠে, প্রেমে পড়ে কবিতার, তারা
সকলেই কোন না কোন সময় একবার বা অনেক  
বার কবিতাকে ছুটি দেয়। হাঁ এ আমার হয়ত
একান্ত ব্যক্তিগত বিশ্বাস। আসলে ইচ্ছার বিরুদ্ধে  
হলেও মাঝে মাঝে বোধ হয় কবিতাকে ছুটি
দিতেও হয়। আমিও আজ তাই বেশ ঘটা করেই
কবিতাকে দিয়েছি ক্যাজুয়াল লিভ- মানে
সাময়িক ছুটি। চাকুরীতেও এমন ছুটির জন্য
থাকত অনেক প্রতিক্ষায় অবকাশি বাহানা।


কি হবে কবিতাকে নিয়ে ভেবে, কি হবে তার
সাথে এত মাখামাখি আর প্রেম করে? যাকে
নিয়ে কবিতা লিখি সেই তো কবিতা থেকে পালিয়ে
বেড়ায়। কবিতার মুখোমুখিই হতে চায় না।
কি জানি? ভাবে হয়ত কবিতা পড়লে মোটা অংকের
টাকা পয়সার হিসাব মেলানো যায় না, কবিতা
পড়লে শাড়ি, গহনাগাঁটির গল্প বলা যায় না।
এরা সব সৃজনশীল কাতর বস্তুবাদী কাঠিন্যতার
সাক্ষাত গরল ছায়া। এরা মিথ্যা করে সংস্কৃতির
লেবাস নেয়, কিন্তু ঘৃণা করে উপাদেয় কবিতাকে।  


কিন্তু আমি যে সেই কবে থেকেই কবিতার প্রেমে
পড়ে কবিদের আত্মীয় হয়ে বসে আছি।
এই আত্মীয়তা নষ্ট করতে বস্তুবাদীদের কত যুক্তি
আর অভাবী জীবনের সঙ্ঘারি কষ্ট ফণা দেখিয়ে
কত প্রচেষ্টা, আমি যেন কবিতাকে এল পি আর
এ পাঠাই মানে তারপরেই আমৃত্যু অবসর! কিন্তু
কিছুতেই কিছু হল না। বরং কবিতাকে ভালবেসে
এর পেছনে ছুটতে ছুটতে আজও হয়রান হোচ্ছি
প্রতিদিন। আজও কবিতা লিখে তোমার প্রতিক্ষায়
থাকি আর ভাবি কখন  কবিতাকে হৃদয়ে
আলিংগন করে বলবেঃ কেন আরও আগে কবিতা
আর কবির আত্মীয় হয়ে উঠতে পারনি!    


এই যে কবিতায় লিখলামঃ অভিসারী বসন্ত
বাতাসের কথা, মেঘ গুড় গুড় যৌবনা বৃষ্টির কথা,
জোনাকী জ্যোস্নায় আকাশ ভাংগা ময়ূরী নৃত্যের কথা,
খর চৈত্রে পাথর ভাংগা নির্মানী মাংশল পেশীর কথা,
ঢেউ খেলানো বাতাসে ভেসে যাওয়া সবুজ দীগন্তের
কথা, জীবনকে নিয়ে মৃত্যুর আর মৃত্যুকে নিয়ে
জীবনের অহর্নিশি দোলাচালের কথা, কত প্রেম,
ভালবাসা, কাছে আসা সংস্পর্শের কথা অথবা দুঃখ
বিরহের কথা-কই সে সবের ঈষত ভাবনায় কি
একবার হলেও মনে হল যে, তুমি কবি আর কবিতার
প্রেমে পড়েছ এখন?