আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,
আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।


একটা কুমারী নদী চিনি যখন দেখি তার বুকে
যৌবনের আদুরী ঢেউ ছলাত ছলাত করে, ভরা বর্ষার
পানিতে উন্মত্ত প্রবল স্রোতে পাড় ভাংগে, উজাড় করে শস্য ক্ষেত,
গাছ-গুছালী। গ্রাস করে পাড়ে সাজানো সংসার, সখের
নারিকেল আম পেয়ার কাঁঠাল গাছ আর বসত ভিটা।


তবুও ভালো লাগে তাকে, ভালো লাগে তার বুকে
পাল তোলা নৌকা, ভালো লাগে ওপারে সকালের সূর্য ওঠা
আর এপারে ডুবে যাওয়া সূর্যের আলোয়
আশা হতাশায় যে রঙ দোল খায় তাতে চোখ মেলে দিয়ে
ভাবতে। আমি ভাবি তখন কোন এক কুমারী নারীর কথা।


আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,
আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।


কুমারী নদীর পাড় ভাঙা উচ্ছ্বলতায়
সর্বস্ব হারিয়েও কুমারী নারী আজীবন ভালোবাসে নদীকে।
অথচ যদিও সে জানে
তার যৌবন হারিয়ে গেলে আর তাকে কেউ
ভালোবাসবে না নদীর মত, কাছে আসবে না
ভালোবাসার গল্প শোনাতে। ভালোবাসার মানুষেরা
দূর থেকে শুধু শুন্য দৃষ্টি দিয়ে তাকাবে আর
হাওয়ায় ভাসাবে দীর্ঘশ্বাস।


কিন্তু এই যে এত হিংস্রতা, এত উন্মত্ততার ভাঙন,
কুমারী নারী ভাবে তবুও সে এত ভালোবাসে কেন নদীকে?
কুমারী নারী অস্ত আকাশে চোখ রেখে ভাবে, তার যৌবন এমনই এক পানিতে গড়া বাঁধন যা ভেঙে গেলে,
হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসে না। কিন্তু অনেক হারানোর
কান্না আর কানাকানিতেও নদীর কিছুই হারায় না, যায়ও আসে না।
বরং পাড়ে শস্য ক্ষেত আবার হয় সবুজ, আবার দোল খায় পাড়ের হাওয়ায় নব জীবনের
উত্থান,
ফি-বর্ষায় আবার হয়ে উঠে সে ভরা যৌবনা।


আজ একটা কুমারী নারীর কথা বলব,
আজ একটা কুমারী নদীর কথা বলব।


কুমারী নদী তাই চিরকাল কুমারীই থেকে যায়,
তার যৌবন হারিয়েও কখনও হারায় না। আর এক
কুমারী নারী তার যৌবন হারিয়ে নদীর পানে চেয়ে
বলেঃ বিধাতা আমাকে নারী না বানিয়ে, যৌবনের ভাষা
না শিখিয়ে নদী বানালে না কেন?


৩১ আগষ্ট, ২০২০।