নামা বর্ষা, শেষ বিকেল, ভাঙা হাট, এমন অনেক  
আয়োজনের মাঝেই কেমন একটা বিদায়ের সুর
মোচড় দিয়ে উঠে বুকের মাঝখানে। তাই বলে কি
আবার ফিরে আসবে না তারা? আবার কি প্রথম
বৃষ্টির জল ছোঁবে না চোখের পাতা, আবার কি
বিকেল তার অবগুণ্ঠন খুলে হাসবে না, আবার কি
পসরা সাজানো হাট জমবে না বটের ছায়ায়!


পরিযায়ী পাখির অদৃশ্যমানতা, পাতা ঝরা শুকনো
গাছের ডাল, জ্যোৎস্নাহীন অমাবস্যার রাত, সব
কিছুর মাঝেই কেমন যেন এক শুন্যতা খেলা করে
নিঃশ্বাসকে আরও দীর্ঘ নিঃশ্বাস করতে। তাই বলে কি
শীতের আগমনে নির্জন সরোবর ভরবে না পাখিদের
কাকলীতে, নতুন পল্লবে সবুজ হবে না বনরাজি, অথবা
আকাশ ভরবে না শুক্লা পক্ষের আলোর বন্যায়!


অথচ যে হৃদয় আকাশ এত বিশাল, যেখানে নানা
বর্ণের কত চাঁদ আলো নিয়ে খেলা করে প্রতিটি রাত,
যেখানে রোদ, বৃষ্টি আর ষড় ঋতুর পাঁচফোড়ন জড়াজড়ি
করে থাকে গায়ে গায়ে, যেখানে পুরব-পশ্চিম, উত্তর-
দক্ষিন সব মেরু এক হয়ে মিশে থাকে পাশা পাশি,
সে হৃদয় কেন মরুর শূন্যতায় খাঁ খাঁ করবে, কেন
বালিয়াড়ি ঝড় থামবে না আকাশে মেঘ দেখে?


কেননা, এখনও যে এ হৃদয়ের সবুজ বেষ্টিত জলের
আধারে নির্ভয়ে খেলা করে সৃষ্টি, যার অগনন বারোয়ারীতে
বসে নিত্য সৃজনশীলতার হাট। কথিত সে হৃদয় ভেঙ্গেছে
বলে কেন শুন্যতা হবে এত শেষ পরিনতি, কেন পতিত
হবে তার রসালো তল। হৃদয় কি ভাঙা যায়, হৃদয় কি এতই
ঠুনকো, হৃদয় কি এতই ভঙ্গুর? যাকে উপেক্ষা করলেই
ভেঙ্গে যেতে হবে, অবজ্ঞা করলেই দূরে চলে যেতে হবে।
নাকি হৃদয় আরও উদার হবে প্রেমকে কাছে টানতে।


তাইত কথিত ভাঙা হৃদয় নিয়ে আজও বসে থাকি আমি,
তুমি ফিরে আসবে বলে।ষড় ঋতুর পাঁচফোড়ন নিয়ে
সময়ের সাথে তাই এখনও ঘর বাঁধি, তুমি এ জীবন
সাজাবে বলে। তুমি কি মনের জানালা খুলে প্রতি দিন
দেখো না জানালার আকাশে কার প্রতিচ্ছবি? আমি জানি
তোমাকে যে ফিরে আসতেই হবে। তা নাহলে যে
মিথ্যে হয়ে যাবে প্রকৃতি,মিথ্যে হয়ে যাবে সকল আলো,
মিথ্যে হয়ে যাবে সৃষ্টি, মিথ্যে হয়ে যাবে ফিরে আসা।