যে বহতা নদীর জলে ভিজিয়েছিলে তোমার পা, আমি
সে নদীর জলে আমার আশরীর অবগাহন করে তোমার
মাঝে ডুবে যাই। উজানের জল গড়িয়ে নদীর উন্মত্ততায়
তোমাকে খুঁজে বেড়াই স্রোতের অনুকূলে,বালিয়াড়ি মেলায়  
একটা চর যেখানে জাগবে বলে সময়রা আজও প্রতিক্ষায়
আছে। নদীর জলের সেই মোহনায় গাংচিলের ব্যস্ত
উড়াউড়ি, বাতি ঘরের ঘন ঘন সংকেত আর নাবিকের
সতর্ক দৃষ্টি বলে দেয় তোমার বুকের জমানো পলি
জমতে জমতে তোমাকে খুঁজে পেতে ঘন সবুজের গভীর
বন হোয়ে ভরে উঠবে বলে বন্দরে এত আয়োজন।


যে অগ্রাহায়নের আঙ্গিনায় তুমি পাকা ধানে পায়ের
আঘাতে গোলায় ভরতে সোনালী ফসল, আমি সেই
ফসলের মাঠ হোয়ে মিশে থাকি তোমার ফসলী মাটির
সাথে। নাঙ্গলের ফলায় তোমাকে খুঁজি অথবা ফসলী
ক্ষেত দাপিয়ে যে উতোল হাওয়ায় তোমার মায়াবী  
স্বপ্নের গন্ধরা ভেসে বেড়ায়, আমি সেই হাওয়ার মধ্যে
ভেসে নিভৃতে তোমার শরীরের স্পর্শ খুঁজি, আবার
কখনো খুঁজি তোমার ঘন চুলের বিবাগী গন্ধ। তোমার
হাতের আঁজলায় ভরে উঠি অগ্রাহায়নে গোলার সঞ্চিত
আধার, যে সঞ্চয়ের গভীরে শংকাহীন ভবিষ্যত নির্ভার
হোয়ে পড়ে থাকে আগামি রঙ্গিন স্বপ্নকে ঘিরে।  


তোমার তুলতুলে নুপুর পা, আলতার রংয়ে রাঙ্গিয়ে  
যে পথ ধরে তুমি প্রতিদিন ছন্দ দোলায় হারাতে
গাঁয়ের মেঠো পথ, আমি সে পথের ধুলোয় আমার
সমস্ত হৃদয় পেতে বসে থাকি তোমাকে বুকে ধারণ
করব বলে। আমি সকাল কিংবা সাঁঝের আকাশে
ক্ষন জন্মা রংয়ে তোমাকে খুঁজতে ডুবে থাকি সময়ের
ভেতর। চলমান সমস্ত প্রহরের প্রেক্ষাপটে কখনো ভাবি
রোদ মাখা বৃষ্টির আকাশে যে রংধনু উঠে, সেখান
থেকে আলতার রঙ পেড়ে এনে তোমার রংয়ের তুলিতে
ভিজিয়ে দিই আমার বেদনার নীল রং, যেন নিঃসঙ্গ  
আমার বেদনারা তোমার পায়ের ছোঁয়ায় ছন্দময় হয়
নুপুরের শব্দে তোমাকে খুঁজে পেতে।