বন্ধুরা, আয়কর সমাচার- এ নিয়ে আমার এটা ৪র্থ কবিতা। প্রথম কবিতা ‘ হিসাবের খাতা’  পড়ে তোমরা যে উসাহ দেখিয়েছ তার ধারাবাহিকতায় এবারের নিবেদন আয়কর সমাচার-৪ ‘নব জন্ম’ লিখলাম। আগামিতে আরও কয়েকটি প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে। সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ...  
---------------------------------------------
নব জন্ম


আমি আমার অস্তিত্ব খুঁজছিলাম পুর্ব পুরুষের প্রোথিত গভীর শেঁকড়ে
স্বচ্ছ মননের জল ঢেলে। দেখি সেখানে এখনও কতগুলো জীবন্ত
স্বপ্ন আর অমর আজ্ঞার সুপ্ত বাণি মাটি আর শেঁকড়ের ভাঁজে
কাত হোয়ে শুয়ে আছে কোন আগামী প্রজন্মের প্রদর্শক হতে।


আমি সেই কাঙ্ক্ষিত প্রজন্মের একজন কিনা জানি না। তবে
জন্ম নেয়ার পর থেকে বার বার অযুত প্রার্থনা নিয়ে জানতে
চেয়েছি আমার অস্তিত্ব, আমার বেঁচে থাকা, পুর্ব পুরুষের সাথে
কতটুকু সঙ্গতিপুর্ণ অথবা আমি কি পিছিয়ে পড়ছি কোন আদর্শ
আজ্ঞা থেকে?


বড় হতে হতে কত লক্ষ্য ছিল আমার, আমি সে সব লক্ষ্যের
একটিরও কাছাকাছি যেতে পারিনি। তাই অর্জিত বিপুল ধন-
সম্পদের মাঝেও নিরন্তর আক্ষেপ নিয়ে কাটিয়েছি আমার
প্রতিটি দিন, প্রতটি রাত। আর বার বার ফিরে গেছি গোড়ার
কাছে যেখানে আমাকেও যেতে হবে একদিন।


কখনও আমার অস্তিত্বের শেঁকড়ের কাছে, জীবন্ত স্বপ্নের কাছে,
এমন কি পবিত্র আজ্ঞার কাছে বার বার ছুটে গেছি আমাকে
আর একটি বার জন্ম ফিরিয়ে দিতে, যেন আমি আমার অধরা
শান্তিকে খুঁজে পাই আমার অর্জিত প্রাচুর্যতার মধ্যে।আমার ভবিষ্যত
প্রজন্মকে খুঁজে পাই আমার দায়বদ্ধতার মধ্যে।  


সকলকেই দেখেছি কেমন মুখ ফিরিয়ে নিতে। কেউ কেউ চোখে মুখে
বাকহীন আভিজাত্যের সু-কঠিন গম্ভীরতায় ঢেকেছে চোখের জল।
তাই নিরুপায় হোয়ে আমি নিরুত্তর পারিপার্শ্বিক ভাষার মধ্যে খুঁজেছি
আমার ব্যর্থতা, আমার নগ্নতা এবং ধ্বংসের মুখে পড়া আমার
বিগত ঐতিহ্যের শেষ অস্তিত্ব।


তারপর একদিন আমার ঐশ্বর্য, ধন-সম্পদ এবং জৌলুসতার আঙ্গিনায়
সুখের বাতাস এসে ধাক্কা খেলো এমন ভাবে, আমি অনুভব করলাম আমি
যেন পুনঃজন্ম নেয়া আমার পুর্ব পুরুষের প্রোথিত শেঁকড়ের শেষ চিন্‌হ।
সেদিনটি ছিল আয়কর প্রদানের দায়বদ্ধতায় আমার প্রথম উন্মেষের দিন,
ভাল লাগা সম্মানের দিন, নিয়মিত আয়কর প্রদানে শুদ্ধিতায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ  
হওয়া নবজন্মের দিন।