বন্ধুরা, আয়কর সমাচার- এ নিয়ে আমার এটা ৫ম কবিতা। প্রথম কপবিতা ‘ হিসাবের খাতা’  পড়ে তোমরা যে উসাহ দেখিয়েছ তার ধারাবাহিকতায় এবারের নিবেদন আয়কর সমাচার-৫ ‘এ কেমন নাগরিক অধিকার’ লিখলাম। আগামিতে আরও কয়েকটি প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে। সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আগাম ঈদ শুভেচ্ছা...  
---------------------------------------------
এ কেমন নাগরিক অধিকার


কালো টাকায় অর্থশালী ঘরের রমনী,
কি রক্ত বইছে ধমনী
বেয়ে, ও সব নিয়ে চিন্তা করার মায়াজাল
কেন সে বুনবে? সৌন্দর্য যেন না হয় বেহাল
তাই নিত্য দামী পার্লারে ছোটে।
মাঝে মাঝে সিগারেট ঝোলে ঠোঁটে,
মাসাজ করে আয়েশি বল্লরী গা,
কস্মিক করা ঠোঁটে খায় ক্যামিকেল চা।
আদর্শ কালো চুলে করে বাহারী ডাই,
বয়েই গেছে তার অযথাই
ভাব্বে নিয়ে বসে পার্বতী কিংবা বনলতাসেন,
ও সব বড্ড সেকেলে, যেমন গানের তানসেন।


ড্যাড্ডি তার প্রতিদিন যায় নাইট ক্লাবে,
আয়কর ফাঁকি দেয়া অর্থ নিয়ে ভাবে-
দিস কান্ট্রি ইজ ভেরী ভেরী পুওর, অসহ্য!
টাকা খরচ করার জায়গা নেই তাই অধৈর্য।
পরিবার ফেলে একা যায় বিদেশ ট্যুরে,
সংরক্ষিত সী বীচ আর ক্যাসিনো ঘুরে
রাত্রি কাটায় পাশে নিয়ে বারবনিতা
তবু ভালো লাগে না নিয়মের জাল পাতা
সর্বত্র, ইতস্ততঃ ভয়, পাছে বলে কিছু লোক,  
এটাই এখন তার মস্ত বড় শোক।
বৃদ্ধ বাবা-মা কোন অজ পাড়া গাঁয়ে
কি ভাবে বেঁচে আছে খেয়ে বা না খেয়ে,
ও নিয়ে নেই কোন তার মাথা ব্যাথা,
সময় নেই বসে ভাব্বে তাহাদের কথা।


ম্যাচ করা রঙয়ের শাড়ি- ব্লাউজে,  
সান গ্লাস এঁটে যায় নীচু সমাজে।  
মাম্মী কপালে টিপ পড়ে বেঢপ সাইজ,
একটা নয়ুন দল করছে রাইজ।
নীচু সমাজের সেবায় করবে আত্ম নিয়োগ,
অথচ নিজের পরিবার থেকে নিজেই বিয়োগ
হোয়ে আছে দীর্ঘ দিন-
ওটা সেপারেশন কালচারের অধীন।
নইলে হওয়া যায় না আলট্রা মডার্ণ
এখানে টাকাই মুখ্য, কিশের সম্মান,
ওটা পরেও হতে পারে। সব কিছু হয় টাকায়
সম্মান গেলে-সম্মানো পাওয়া যায়!


কে বোঝাবে তাদের সম্মানের কি সংজ্ঞা,
এখন জ্ঞানের কথার জ্ঞানিরাও খুব মঙ্গা,
তাই সাদার জায়গায় কালো টাকাই নিচ্ছে গদি।
সকলেই বলছি- ভালো হত যদি-
ভালো মানুষ এসে চালাতেন এই দেশ,
কিন্তু কে গড়বে সেই অনুকূল পরিবেশ।
ডাইরেক্টলী কিংবা ইন্ডাইরেক্টলী
যতই করি এই স্বপ্ন নিয়ে বলাবলি,
যদি নাই-ই করি কোন প্রতিবাদ,
আমিও যে এই অনিয়মের অনুবাদ
করছি দিনের পর দিন,
বলছি-আয়করপুষ্ট দেশ আজ বড়ই স্বাধীন।
চমৎকার- ভারি চমৎকার,
বুঝি না এ কেমন নাগরিক অধিকার।