শিশির ঝরার শব্দ তুমি কি এখনও শুনতে পাও। আমি তো এখন এই
নামা বরষার শেষ প্রহরের নির্জন আকাশে তোমাকে খুঁজি শব্দের মাঝে,
শিশির ঝরার শব্দ। তুমি দূর্বা ঘাসে শীতের সকাল মাড়িয়ে যেতে যেতে
খোলা পায়ে শিশিরের জল মাখতে ভালোবাসতে। আর ভালোবাসতে
ঝরে যাওয়া শিউলী ফুল। তাইত কান্না ঝরার শব্দে তুমি ভরাতে শীতের
আলুথালু শুন্যতাকে।


রাতের আঁধারকে কেন ভালোবাসে শুভ্র স্নিগ্ধ শিউলী ফুল, দিনের আলোয়
তাকে কেন মলিন হতে দেখো। এ নিয়ে তোমার নানা কৌতুহলের মাঝে
কখনও কখনও রাতের অন্ধকারে কান পেতে শুনতে চাইতে শিউলী ফুলের
ঝরে যাওয়া শব্দ অথবা কোন কান্না হাসির গান। তাইত রাতের হেঁটে
যাওয়ার শব্দ থেমে গেলে, তুমি থাকতে আলোর প্রতিক্ষায়।


পাতা ঝরার শব্দ তুমি কি এখনও শুনতে পাও। আমি তো এখনও পৌষের
উদাস হাওয়ায় পাতা ঝরার শব্দে তোমাকে খুঁজি। তুমি ভালোবাসতে শুকনো
পাতার মর্মর ধ্বনি। বনতল পথে হাঁটতে হাঁটতে কতবার খুঁজতে ওদের
মাঝে নুতনের আহ্বান। সে শব্দ থেকে বাঁধতে সুর, গুন গুনিয়ে গাইতে গান।
তাইত ফুল ফোটার শব্দ পেলে তুমি আনন্দে ভাসতে নতুন ফসলের সন্ধানে।


শিমুল তুলোর ভেসে যাওয়া শব্দ তুমি কি এখনও শুনতে পাও। শিমুল ফুলের
লাল রং তুমি ভালোবাসতে। অথচ ওর শুভ্র তুলোর রঙয়ে কখনও কখনও
আঁতকে উঠতে তোমার অন্তিম আবরনের রংকে ভেবে ভেবে। তবুও তুমি
ভালোবাসতে ঐ শুভ্রতাকে, ভালোবাসতে সাদা চাদরকে। আমি তাই শিমুল
তুলোর ভেসে যাওয়া শব্দের মাঝে তোমাকে আজও খঁজি। এখন বুঝি, তুমি  
জীবনের সকল শব্দের মাঝে কত কি খোঁজার ছলে আমাকেই খুঁজতে
তোমার সম্মুখে অনুক্ষন।


শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সকল সময়েই রাতে তোমার ঘুম আসত না, যদি না তোমার  
শরীর জড়িয়ে রাখত সাদা চাদর। এখন কি তোমার ঘুম আসে? যে সাদা
চাদরে ঢেকে তোমাকে অন্তিম শায়নে একলা ঘরে রেখে এলাম, সে ঘরের
অন্ধকার কি ম্লান হয় চাদরের শুভ্রতায়! সেখানে কি শুনতে পাও শিশির
ঝরার শব্দ,  শিউলী ফুল ঝরার শব্দ অথবা শিমুল তুলোর হাওয়ায় ভেসে
যাওয়ার শব্দ? খুউব জানতে ইচ্ছে করে, আমাকে ছাড়া এখন কেমন আছো।