এখন মাঝে মাঝে মনে হয় টেলিভিশনের গলাটা টিপে ধরি। তা হলে
এক সাথে কতগুলো মুখ বন্ধ করা যেত। যারা  দিনের পর দিন রাতের
পর রাত কিছু ইচ্ছা অনিচ্ছার ভূল ত্রুটি মাখানো বিগত মরিচা পড়া
ইতিহাস শকুনের মত খুবলে খুবলে খেয়ে বসে আছে, আর গনতন্ত্রের শিশুদের
উগলিয়ে দিচ্ছে নাঙ্গা সড়কে আশ্বিনী কুকুরের মত। আমিও কুকুরের বাচ্চা হোয়ে
ছাইয়ের ওম টুকু পেয়েই যেন ধন্য হোচ্ছি ডাস্টবিনের উচ্ছিষ্ট খেয়ে, সেটাও
কখনও ভাগাভাগি হয়ে যায় ঠিকানাহীন, কর্মহীন মানুষের ক্ষুধার সাথে,
তাই হয়ত কখনও জানাও হবে না ‘ডাইমন্ড পাপ্পী’-র গন্ধ কেমন!  


কখনও কখনও মনে হয় সব সংবাদ পত্রের প্রচার বন্ধ করে দিই। তাহলে
কিছু কলম অগ্রাহায়নের শিশির মাড়িয়ে নবান্নের মাদকতায় উজ্জীবিত হত
স্বপ্নময় সুস্থ সুন্দর জীবনের কথা বলতে, শেখাত কি ভাবে শৌচাগারের
কোমোড ব্যবহার করতে হয়, ধনাঢ্য গনতন্ত্রের পথে হাঁটা যায়। যেখানে
নিজের ঘরে গনতন্ত্র নেই, গনতন্ত্রের সংজ্ঞা শিখতে যে আলোর পথটুকু হাঁটা
দরকার; সে পথের ঠিকানা এখনও অজানাই রয়ে গেছে আমজনতার পাঠশালায়,
সেখানে বেহুদা বস্তা পঁচা কথার ফুলঝুরি আর স্বাধিকার, অধিকার নিয়ে
উদ্দ্যেশ্যপ্রনোদিত কোন জনপদের সাথে গদ্যের ভাষায় কথা বলা, কে জানে!  


কখনও কখনও মনে হয় মোবাইলের তরঙ্গ পথে বাতাস শুন্য করে দিই।
তাহলে পথের দূরুত্বে কিছু মিথ্যা বলা কথার হত মৃত্যু, সত্যের ঢোল যথার্থই
বাজত বাতাসে, সত্যরা ক্ষত হয়ে রক্ত ঝরাত না মিথ্যার আঙ্গিনায় লাঞ্ছিত
হোয়ে! যেখানে সত্য বলা শেখা হল না, যেখানে বাংলা ভাষাই শেখা হল না,
সেখানে থ্রী জি আর ইন্টার নেটের ব্যবহার কি পর্ণ্ দিয়ে শিখবে আগামী প্রজন্ম,
নাকি খুঁজবে স্বাধীনতা, সমাজ, পরিবার কাকে বলে অথবা কাকে বলে দেশ প্রেম,
কাকে বলে লাইলী-মজনুর ভালোবাসা?


ইদানীং একটু একটু মনে হতে শুরু করেছে এমন, এ জাতীর গৌরব গাঁথা ইতিহাস
পুড়ে ফেলি, তাহলে এই জন্ম ভূমি মায়ের বুক জুড়ে যে প্রকৃতি আজও আতঙ্ক গ্রস্থ
হয়ে খেলা করে প্রতিদিন তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিয়ে, তার অবসান হত নতুন
অধ্যায়ের সূচনায়, স্বাধীনতা পেত মুক্তি। রক্ত ঝরা সকাল কিংবা গোধূলীর সুর্য,
খুনের পরিবর্তে প্রকৃতির সমস্ত শরীরে ঢেলে দিত প্রতিনিয়ত আনন্দ আবির।
যেখানে ‘৫২-র মুখের কথা শোনা হল না, যেখানে ’৭১-র বীর এবং বীরাঙ্গনার
স্বপ্নের কথা জানা হল না, যেখানে ’৭৫, ’৮১-র পথ ধরে আরও কত বর্ষ পুঞ্জিকার
পাতা ঝরে পঁচে গেল কালের গহ্বরে কলঙ্কের তিলক এঁকে, যেখানে ইতিহাসের পাতায়
জীবনের সুখ আর মুক্তির গল্প অজানা প্রেক্ষাপটে ষড়যন্ত্রেরর খোঁচায় বিদ্ধ হয়ে এখনও
কাতরায়, সেখানে কখনও কখনও মনে হয় আমি যেন এক বেজম্মা ফেরারী।