আজ রাতে স্বপ্নে তোমাকে অনেক্ষণ কাছে পাব বলেই কি ঘুমটা  
এত দীর্ঘ ছিল? ইদানিং চোখে ঘুম নেই। সারাটা রাত প্রায় নির্ঘুম
কাটে। ছোট কালেও ঘুম আসত কি না জানি না। তবে মা ছিল  
বলেই ঘুম পাড়ানী গান হয়ত গেয়েও থাকতে পারে। সব মায়েরাই
বুকের ধনের সুখের জন্য কত কিছুইনা করে। আমার মাও এর থেকে
আলাদা নয়। কিন্তু এখন তো আর মা কাছে থাকে না। যার কাছে
থাকার কথা ছিল সেই তুমিও চলে গেছো আমায় ছেড়ে দূর বহু দূর।


এখন বয়স বেড়েছে, শরীরে নানান ধরনের অসুখ বাসা বেঁধেছে, তারা  
প্রতিদিন আমার রক্ত ধমনীতে বসে, আমার বুকে হাওয়ার খাঁচায় বাস
করে, আমারই খ্যদ্যের রস শুষে আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্রে যেন ক্ষন
গুনছে এখন প্রতিক্ষন।মাইগ্রেনের ব্যথা যখন অ্যাটাক করে তখন ভালো
লাগে না কষ্ট পাওয়ার কবিতায় কষ্টকে ভালবাসতে। অষ্টরাইথিসের ব্যথা
যখন তির তির করে বাড়তে থাকে তখন স্বপ্নেও তোমার সাথে হাঁটতে
মন সাঁয় দেয় না।


সেই তুমি চলে যাওয়ার পর থেকে আজ কতটা ফাগুণ, কতটা বরষা
পার হয়ে গেল অথচ আমি আজও একা ভীষন একা। সঙ্গী বলতে কবিতা,
কলম আর কাগজ। শিয়রে ছোট্ট টেবিলের উপর কিছু প্রয়োজনীয় ঔষধ,
পানির বোতল, ঘোলাটে আয়না, তেল চিটচিটে চিরুনী আর ফ্রেমে আঁটা
ঝাপসা প্রায় প্রথম দেখা তোমার সাদা কালো ছবি। ঐ ছবিতে নিষ্পাপ  
তোমার মুখটুকু এখনও চোখে চোখ রেখে দিবা নিশি কি যেন কথা বলে  
যায় আর আমায় ভুলাতে চায় আমার সকল ব্যথা।


সবারই তো সঙ্গী আছে, যেমন আকাশের মেঘ, বাতাসের গন্ধ, চাঁদের জ্যোস্না,
সাগরের ঢেউ, জোনাকীর রাত্রি,  পাহাড়ের ঝর্ণা, বনের পাখি, পানির মাছ
অথচ আমার কোন সঙ্গী নেই। ঠিক তাও না সঙ্গী বলতে যা আছে তা হল-
কবিতা, কলম আর কাগজ। শিয়রে ছোট্ট টেবিলের উপর কিছু প্রয়োজনীয়
ঔষধ, পানির বোতল, ঘোলাটে আয়না, তেল চিটচিটে চিরুনী আর ফ্রেমে
আঁটা ঝাপ্সা প্রায় প্রথম দেখা তোমার সাদা কালো ছবি।


তবুও আজ স্বপ্নের ভেতর সারা রাত তুমি সঙ্গী হোয়ে ছিলে আমার দীর্ঘ ঘুমে।
আমি কিছুটা সময়ের জন্য ভুলেই  গিয়েছিলাম তুমি নেই, তুমি চলে গেছো দূরে
বহুদুরে না ফেরার দেশে, ভুলেই গিয়েছিলাম আমার মাইগ্রেন আর অষ্টরাইথিসের
ব্যথা, ভুলেই গিয়েছিলাম আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে কিছু মরন ব্যাধি।