নাহ্‌ আর পারি না, তাই শীতের সকালে কাঁচা পাকা রোদকে
ফিরিয়ে দিয়েছি গ্রীষ্মের কাছে। ঢেকী পাড় দেয়া নতুন চাল,
চালের মিহি দানা আটায় ইচ্ছে ছিল অগ্রাহায়নের খোলা আঙ্গিনায়
বসে মায়ের হাতে বানানো ভাপা পিঠা খাব। পুলি পিঠা, চিতই
পিঠার স্বাদ নেব। অথচ এবারের শীতটা কেমন ম্যাড়ম্যাড়া লাগছে,
মনটাও ভালো না। পোড়া দেশে অবরোধের ধাক্কাটা পথের চেয়ে
মননেই বেশী বেয়াড়া মনে হচ্ছে।


নাহ্‌ আর ভাল্লাগে না, প্রাত্যহিক ফেবু বন্ধুদের অচেনা ভালোবাসা
ফিরিয়ে দিয়েছি স্মৃতির পাতায় ঝাপসা হতে। নতুন বন্ধু অুরোধের
বোতাম খুলতে ভালো লাগছে না। এবার বিজয়ের মাসে কথা ছিল
নতুন পুরাতন বন্ধু মিলে একাত্তরের কোন রণাঙ্গন ঘুরে আসব,
বেঁচে থাকা মুক্তি যোদ্ধাদের মুখে মুক্তি যুদ্ধের গল্প শুনব। অথচ
বিজয়ের মাসটা গর্ব ভরা আনন্দের চেয়ে কেমন শকুনি কান্নার রোলে
হচ্ছে ভারী দিনে দিনে, ক্ষনে ক্ষণে।


নাহ্‌ আর ইচ্ছে হয় না, কোরা কাগজের উপর কলম বন্ধ করে কবিতার
সত্য ও সুন্দর শব্দদের ফিরিয়ে দিয়েছি বিদ্যা দেবীর কাছে নিরাপত্তার জন্য।
এবার ইচ্ছে ছিল শহীদ মিনারের পাদ দেশে খালি পায়ে হেঁটে গিয়ে শহীদদের
ভরাট কন্ঠে শোনাব ভাষাকে নিয়ে, মাকে নিয়ে, দেশকে নিয়ে উন্নয়ন আর
মুক্তির কবিতা। অথচ মনের ভেতরে আঁকা শহীদ মিনারটা কেমন মোচড়
দিচ্ছে, চোখের জলে ধরে আসছে কন্ঠ, আর তাই বুঝি বিদ্যা দেবীর চোখেও
আজকাল ছল্‌ ছল্‌ করছে শনির জল!