সত্যি বলছি সময় করে উঠতে পারছি না। ঠিক তাও না- ইচ্ছে
করলে যে সময় বের করা যেত না তাও না। কিন্তু ইচ্ছে করে না।
তুমি অভিসারের কথা বল। আচ্ছা অভিসার এর সময়টা কখন ভালো
হয়, অভিসারে গেলে মনের অবস্থা কেমন হতে হয়? অনেক কথা বলতে
চেয়েও ভুলতে হয়, বুকের মাঝে শির শির করে ভালোবাসার ব্যথা,
চোখের পাতায় থাকে পাহাড়ি বাতাস, পায়ে গজায় অর্কিডের শেঁকড়,
কন্ঠ হারায় আকন্ঠ তৃষ্ণায়। তবুও ভালো লাগে, কেন ভালো লাগে
বলতে পারব না, যেমন  পাশা পাশি বসলে মুখ নয়, তোমার
হাত কেন এত কথা বলে বলতে পারব না। তবুও তা ভালো লাগে।


চারিদিকে যে ফিস্‌ফাস চলছে, এত উঁকিঝুঁকি, এত কানাকানি, এত টানাটানি
এর মধ্যে কি অভিসার ভালো লাগে! অভিসার তো দূরের কথা নিজেকেই
ভালো লাগে না। তাই সময় বের হয় না তোমার কাছে চলে আসার।
আসলে ইচ্ছে করে না। তাই আপাততঃ সব বন্ধ করে দিয়ে ভাবছি এক
অন্য ভাবনা। এবার শান্তির জন্য, মুক্তির জন্য ঘর ত্যাগ করলে
তোমাকে ছাড়া কি ভাবে থাকা যায় তার অনুশীলনটা করছি ভেতরে ভেতরে।
আর ভাবছি কি ভাবে প্রেমিক তার প্রেমিকাকে, মা তার সন্তানকে, স্ত্রী তার
স্বমীকে, কন্যা তার বাবাকে, পুত্র তার মাকে, কৃষক তার স্বপ্নের সোনালী
মাঠকে, জনতা তার জন্ম ভূমিকে ছেড়ে দিয়েছিলো স্বধীনতার জন্য, মুক্তি
যুদ্ধ্যের জন্য, বিজয়ের জন্য অনিশ্চিতের পথে পা বাড়াতে।


আমিও সেই জাতিরই সন্তান, প্রয়োজনে আমাকেও পারতে হবে। আমি পারবও,
এমন কি না চাইলেও। কেননা এ ধমনীতে যে রক্ত বইছে সে প্রবাহে পুর্ব পুরুষের
বীরোচিত রক্তের প্রবাহ আর্য থেকে অনার্য হোয়ে দ্রাবিড় বাংগালীর রক্ত এখনও
বহমান। তবুও মায়া লাগে, কষ্ট হয়, প্রেম জাগে ভালোবাসার চোখকে ফাঁকি
দিয়ে। তাইত অনুশীলন করছি, চর্চা করছি আর প্রতিক্ষা করছি প্রয়োজনে তোমার
অভিসারের উষ্মতাকে আমি বীরের ত্যাজস্মিতায় ভরে কখন ফিরে আসব
বিজয়ের আঙ্গিনায় নির্ঝঞ্ঝাট তোমার অভিসারে।