পেঁচাকান্না শীত যেন জেঁকে বসেছে ছাতিম গাছের বদ্ধ আঁধারে,
আমি শুনি রাত্রির দ্বি-প্রহরে ঘন নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে  শিক্ত শিশির কণা,
ঠান্ডায় গাছের উষ্ন নিঃশ্বাসও হার মানে তাতে, পেঁচার কান্না মিলিয়ে
যায় কনকনে শীতের শির শির অনুরণনে।


দূর অতিথি পাড়ার শেষ প্রান্ত থেকে ভেসে আসে ফেরারি কুকুরের
কান্না, ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক গলে শোঁ শোঁ শব্দে ঢুকে পড়ে অননুমোদিত  
পৌষ-মাঘের শীত কিষাণির জুবুথুবু ছেঁড়া কাঁথার নির্ঘুম কোলে।
এ যেন শীত নয়, সর্পিল শীতের বিষময় ঠান্ডা ছোবল!


রাত্রির দ্বি-প্রহর বারান্দায় কতক্ষন এমন বাস্তবতায় দাঁড়িয়েছিলাম
এখন আর মনে নেই। তবে মনে পড়ছে ‘ফায়ার প্লেস’ এর ব্যবস্থায়
আগুন না থাকলেও ঘরে তখনও ‘রুম হিটার’ তার উষ্ণতায়
আমাকে টানছিল ঘামের স্বাদ পেতে, আমি সে স্বাদের রেশে আচ্ছন্ন
ছিলাম বাকীটা রাত।


প্রতি দিনের মত আজ সকালে জানালার গ্রীল ঠেলে রোদ তার
উষ্ম জিহ্বায় চাটেনি আমার আড়মোড়া শরীর, কুয়াশা মেঘের ভেতর কি
রোদেরও ছিল অনন্ত আকুতি উষ্মতায় ভাসিয়ে দিতে ছাতিম গাছের
চারিপাশ? হঠাত ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠি, তড়িঘড়ি এসে দাঁড়াই পরিচিত
কুয়াশা বারান্দায়, দেখি ছাতিম তলায় আগুন পোহানো দরিদ্র মুখের পাশে
একটি মৃত পেঁচার ঠান্ডা মুখ।