আমি এখন আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে বসে থাকি। কম্পাসের
আধার ঘেরা কোটরে চোখ আমার সদা জাগ্রত ঈশান, নৈরিত,
অগ্নি, বায়ু হয়ে ‘দশ দিকপালের’ দিকে অনুক্ষন। পা দুটো যেন
সোজা-সুজি ধরনীর বুকে বিস্তৃত মহা সমুদ্রের তট ছুঁয়ে চলমান
মহাকালের ক্লান্তিকে মুছে দিতে, আর হাত দুটো বুদ্ধের আকার
ধারণ করতে ব্যর্থ হলেও কোলের  মধ্যে এখনও কলমের খোঁজে ব্যস্ত।

দেখি সুর্য তার পুরোনো সড়ক ধরে প্রতি দিন উদয় আর অস্তের সাথে
আঁধারকে নিয়ে বিভিন্ন মেরু প্রদেশ বেড়াতে যায়। ভালো লাগে না, রাত্রির
যেন অভিমান হয়। রাত চায় সুর্য তার কাছেই থাকুক আজীবন। কিন্তু
ভোরের আকাশ কাঁদে, ভাবে শিশির ঝরা আঙ্গিনায় শিউলী বকুল ফুলের
সাথে মৌসুমী অকাট্য প্রেমের কি দশা হবে, অথবা সুর্যমূখী কার পানে চেয়ে
বন্দনা গাইবে প্রকৃতির।

এদিকে মুখ গুমড়া করে থাকে আলোকময় দিন। সেও চায় সুর্য তার কাছেই
থাকুক দিনের পর দিন। নীড়ে ফেরা পাখিদের গান হারিয়ে যাবে গোধূলীহীন
দিগন্তের আঁধারে, সন্ধার আকাশ তাই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার রোল তুলতে চায়।
অথবা আঁধার যারা ভালোবাসে যেমন জোনাক পোকা, ফলজ বাদুড়, ছাতিম পেঁচা,
ঝিঁ ঝিঁ পোকা তাদের কি হবে, কোথায় পাবে তাদের মত করে আর একটা পৃথিবী।
(চলবে)