আমি নিজের দিকে চোখ ফেরাতেই দৃষ্টি পথে হোঁচট খাই, থমকে যায়
আমার অনুসন্ধিৎসু চোখ, দেখি হিমালয়ের পাদদেশে হাঁটু গেড়ে অবনত
হয়ে বসে আছে “কনফুসিয়াস” এক অপরুপ কন্যাকে দুর্ভেদ্য পাহাড় দেয়ালে
আগলিয়ে। “মে ফোর্থ আন্দোলন” এর কাব্যিক রেওয়াজকে ধর্ম জ্ঞান করে
লুটে পড়ে কনফুসিয়াসের পদযুগলে দেশকে ভালো বাসতে, তার পর হেমিলনের
বংশিয়ালা সম “মাও” এর ইশারায় অনেক তন্তের বেড়জালকে মাড়িয়ে যায়
গনতন্তের কাছে ফিরে যেতে।

আমি ক্লান্ত হইনি এখনও, কেউ আমাকে ধমকও দেয়নি, তবে বুকের মাঝে
একটা কষ্ট এমন ভাবে মোচড় দিয়ে উঠছিলো কিছু দিন ধরে যে, তার
বিষের জল চোখের করনিয়া ছিঁড়ে বের হয়ে আসছিল আর আমি ক্রমেই অন্ধ  
হয়ে পড়ছিলাম হাজার সুর্যের আলোর মধ্যেও। তবুও আমি নিজের দিকে মুখ
ফিরিয়ে নীচের দিকে চোখ ঝুলিয়ে দিই। এবার চোখ নিজেই নিজের দৃষ্টি আলো
খুঁজে নেয়ার আগেই বিস্ফারিত হয় বাংলা মায়ের বুকে নিস্পাপ সন্তানের তাজা
রক্তের বন্যা দেখে।

দেখি সদ্য কবর খুঁড়া স্বধীনতার দেহ যেন ক্ষত বিক্ষত, দেখি গনতন্ত্রের লাশ,
দেখি অর্থনৈতিক মুক্তির মৃত দেহ। অথচ এইখানে ঠিক এই অঞ্চলে
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজীর পদধূলিতে জন্ম নিয়েছিল
সভ্যতার বলিষ্ঠ শিশু , জন্মেছিল অহিংস আন্দোলনের মহাপুরুষ মহাত্মা গান্ধী,
জন্মেছিল কত সাধক পুরুষ, রবীন্দ্র, নজরুল, জন্মেছিল বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ সন্তান
শেখ মুজিবুর রহমান।

তবুও কেন পদ্মা-মেঘনা-যমুনা আর সীমান্ত নাফ নদীতে পাথর বালুর সাথে  
গড়ায় শান্তিকামী মানুষের চোখের জল, কেন সিঁদুর হয় রক্ত, কেন জায়নামাজ
হয় কফিনের চাদর, কেন অধিকার কাঁদে বিচারালয়ের কাঠগড়ায়? এ সব ভাবতে
ভাবতে আমার চোখের জল শুকিয়ে আসে, ঝিঁ ঝিঁ ধরা শরীর আর পা অসাড়
হতে থাকে, “ছায়া পথ” এর গহীন থেকে অচেনা শব্দের ভারে  ক্লান্ত হতে হতে
শেষে ঐ আকাশের গায়েই হাজারও প্রশ্নের রাজ্যে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
(শেষ)