দেরাজে রক্ষিত শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জী, জাঙ্গিয়া ইত্যাদির
যত্নআত্তিতেও একটা জায়গা থাকে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,
নির্দিষ্ট ভাঁজে উত্তাপের পরশ, তার পর শরীরে চেপে বসে
তারা সতর ঢাকতে এবং ইজ্জত নিবারনে।


মানুষের মতই পুরোনো হলে সব কিছুকেই নতুনদের
জায়গা করে দিতে হয়। অথচ যে শার্টটা আজ বাতিল করে
দিচ্ছি, ওটা এত দিন অনেক যত্নে আমার শরীরে বাস
করেছে, অভাব আড়াল করে হলেও আমার গা ঢেকেছে।


রঙ চটে গেছে, কলারে ময়লার দাগ, ঘামের গন্ধ, বোতামের
ঘাটে বিপরিত রংয়ের সুতো, বোতামেরও মিল নেই। তবুও  
এতদিন ওটার মূল্য ছিল। এখন মূল্যহীন,  মূল্য দিয়ে
কি মায়া কেনা যায়! তাই বড্ড মায়া হচ্ছিল, তবুও তাকে
ছুঁড়ে ফেলে দিতেই হবে, নইলে নতুনের জায়গা হবে কি করে?


আমি অবশ্যি প্রকৃতির নিয়মকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি।
জানি প্রকৃতির নিয়ম অমোঘ। গাছের পাতা ঝরে
আবার নতুন পাতা জন্মায়, চাঁদের জ্যোৎস্নারা মরে আবার
জন্ম নেয়, নদীর এ কূল ভাঙ্গে আবার ও কূল গড়ে,
মাটির কবর, কয়লার কবর পুরোনো হয়- নতুন হয়,  
সেই সাথে পৃথিবীও বদলায় প্রতিদিন।


তাই মায়ার আবেগে কষ্ট পেলেও আফসোস্‌ করি না,
ভালোবাসায় আঘাত পেলেও ভেঙ্গে পড়ি না,
কেউ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করলেও প্রতিহিংসা হয় না,
দারিদ্রতায় কষ্ট পেলেও হতাশ হই না,
প্রতারণায় দগ্ধ হলেও পুড়ে ভষ্ম হই না,
বিরহে একলা হলেও একাকিত্বে ভুগি না,
কেউ স্মৃতি হয়ে গেলেও কান্না পায় না,
তাই আমার জন্যও কেউ কেঁদো না।