আমি কোন লুপ্ত পুরাকীর্তির সামনে এসে দাঁড়াই।
আমার টেরাকোটা হৃদয় কথা বলে কোন প্রাচীন
সভ্যতার সাথে। অনুবেক্ষনীয় চোখ খুঁজে বেড়ায়
কারও হাতের ছোঁয়া, পায়ের চিহ্ন, শরীরের
অপ্রদর্শীত ভাঁজ।


আমি প্রাচীন সভ্যতার রাশভারী মনন জগতে ধীর
পায়ে সম্মুখে হেঁটে যাই। অস্পষ্ট হলেও কানে ভেসে
আসে কান্না হাসির শব্দ, ষড়যন্ত্রের ফিস্‌ফাস্‌ নীলনক্সা।
ব্যাহৃত তলোয়ারে যেন এখনও লেগে আছে হত্যা
কিংবা বিজয়ের রক্ত।


আমি সভ্যতার  আরও ভেতরে প্রবেশ করতে থাকি।
দেয়ালে অংকিত নারী চিত্রের চোখে দেখি তখনও যেন
ঝরছে চোখের জল। হাতে সুরা ভর্তি পাত্র আজও কোন  
নেশাড়ুর অপেক্ষায়। খিলানে সন্ধ্যাবাতির সংক্ষুব্ধ কালি
যেন এখনও জলসা ঘরের কালীমায় জীবন্ত।


আমার পা পাথরের মত ভারী হয়ে থমকে যায় সভ্যতার
গভীরে। স্পষ্ট শুনতে পাই কে যেন আমায় ধমকের সুরে
বলছে- আর এক পাও সম্মুখে নয়। সেই ধমকের সুরে যে
শব্দ মালা তাতে এখনও সামন্তবাদীতার ঝাঁজ। তাতে
এখনও সাধারণের প্রবেশ নিষেধ।


স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। দেখি আমার গভীর রাতের একলা
বিছানায় তখনও আমি কাঁপছি আতংকে। আর আমার
ভাবনায় কেবল ফিরে ফিরে আসছে একটি প্রশ্ন আমরা কি
এখনও স্বাধীন? নাকি মানবাধিকার আর মিছিল মিটিংয়ের
আড়ালে সামন্ততন্ত্রই আজও গনতন্ত্রের বাহারী মোড়কে
মোড়ানো ভোট বাজারের ভোগ্য পণ্য!