এখানেও তো আকাশ দেখি, কেমন খন্ড খন্ড আকাশ।
তোমার আকাশ ছোঁয়া বাড়ির  কার্নিশ ঘেঁষে এখানেও
তো চাঁদ দেখি- কেমন লুকোচুরি চাঁদ। এখানেও তো  
রোদ হয়, সন্ধ্যা হয়, মেঘ হয়, বৃষ্টি হয় আবার সকাল
হয় রোদ হয়...এখানেও তো বাড়ির ছাদ আছে, জানালা
আছে, বারান্দা আছে, তবুও সব কেমন ছেঁড়া ছেঁড়া।


মনে পড়ছে মায়ের মুখ। আমার ছোট বেলায় মা যখন
চাঁদের কপালে চাঁদের টিপ দেয়ার আব্দার জানাতো
চাঁদকে, তখন ভাবতাম চাঁদ কি মায়ের থেকেও সুন্দর
হয়, অপলক মায়ের মুখের দিকে চেয়ে থাকতাম আর
কচি মন নিয়ে একটাই কথা ভাবতাম চাঁদ কি মায়ের
মত বুকের দুধ দেয়, ঘুম পাড়ায় তার সন্তানকে!  


এখন খুব মনে পড়ছে, মা’কে চাঁদ থেকে আগলিয়ে
রাখতে তার আঁচলে হারাতাম বুকের দুধের জন্য। পান
খাওয়া চুন লাগিয়ে অথবা নিম পাতার তিতা রস লাগিয়ে
আমাকে নিবৃত করতে চাইত মা। আমি বড় হয়েছি,
এখন দুধ ছেড়ে দেয়ার সময়। তবে অনেক বড় হলে সে
দুধের স্বাদ যে অন্য বক্ষেও খেলা করে কেমন ভাঙ্গা ভাঙ্গা
ভাবনায়, তা বলা হয়নি।


মনে পড়ছে ছোট্ট দোলনার কথা, সেই দোলনা ছেড়ে
আম গাছে ঝুলানো পিঁড়ির দোলনায় আকাশে উড়ার
কথা। কেমন আছে খেয়ালী ফজলি আমের গাছটা। এখন  
তো কত আম দেখি তোমার আধুনিক ঠান্ডা মিনা বাজারে।
তবুও  আম, জাম, পেয়ারার স্বাদ লেগে আছে যে গ্রামীন
জিহ্বায়, তাকে ভুলতে পারি না।


মনে পড়ছে, এখন অনেক কষ্ট বুকে মনে পড়ছে। তুমি
কেমন করে ভুলে গেলে সকল স্বকীয়তা, খোলা মাঠ,
খোলা আকাশ, খোলা চাঁদ, খোলা ছাদ, খোলা জানালা,
খোলা বারান্দা। কেমন করে ভুলে গেলে রোদেলা যৌবন,
ভরা সন্ধ্যা আর বুকে মুখে মাখা মাখি অমৃত স্বাদের
সঞ্জীবিত কামনার রাত, আমাকে দেয়া প্রেম প্রতিশ্রুতি।