আচ্ছা আমি কি আসলেই হেরে গেলাম?
এই যে আমি যখন ছোট্ট একটা ফ্ল্যাটে বসবাস করছি
তখন তুমি প্লট পেলে। তাতে আর্কিট্যাক্ট দিয়ে আধুনিক নক্সায়
ঢাউস বাড়ি বানালে। সামনে লন, নিরাপত্তা চৌকি, ঝুল বারান্দায়
বৈকালিক চা চক্রের ফিরিঙ্গি আসন, পাশে দোলনা, দোল চেয়ার।
শুনি আজকাল নাকি কুকুর পোষাও ধরেছ, ওটা না হলে নাকি
এরোস্ট্রোক্রেসির ভাবটা ফুটে না।  


অথচ আমি যখন ফ্ল্যাটে,
তখন তুমি ভাড়া বাড়িতে ভাড়াটিয়ার সাথে
মাসিক ভাড়ার টাকা নিয়ে হয়রান হতে আর আমার ফ্ল্যাট নিয়ে
রাজ্যের কল্প কথায় ভাসাতে আমার পড়শীর কমিউনিটি পার্কের
বৈকালী আড্ডা।ভাবতাম সত্যিই বুঝি আমি জিতে গেছি
আমার আধুনিক আভিজাত্যের বাস্তব চিন্তায় তোমাকে পিছনে ফেলে
জিতে গেছি। যদিও তোমাকে বলা হয়নি তোমার সাথে আমি জিততে চাইনি
কোন দিন কোন নাম ডাকের খেলায়।


শুধু চেয়েছি তুমিও সুখী হও, তুমিও সন্তানের মা হও।
ব্যাংক ব্যালেন্স, সোনা-দানা, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি দিয়ে  
ভরে থাকুক তোমার সাজানো সংসার। আজ তোমার সব হয়েছে।
তুমি শারীরীক চেক আপে সিংগাপুর যাও।শুনি,তবুও তুমি সুখ খুঁজে পাও না।
চরম ডায়াবেটিক্স আর উচ্চ রক্ত চাপে মনের কোনে জমে থাকে মৃত্যু ভয়।
অথচ আমি  আজও আন্ডার ওয়েট হয়ে ঐ একই পার্কে গুঞ্জন শুনি-
অনেক কিছুর সাথে আজকাল নাকি তোমার কুকুর প্রীতিও গেছে কমে!  


এখন তাই ভাবি, কে জিতেছে অথবা কে হেরেছে আজ-  
এই জীবন গড়ার খেলায়, কাকে বলবে তুমি সুখী অথবা অসুখী?
তোমার সন্তানেরা তোমায় ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছে বিদেশ বিভূঁইতে,
তুমি বড্ড একা। আর আমি সাদামাটা জীবন নিয়ে সকলের মুখে
এখনও দেখি স্বল্পে তুষ্টির হাসি। জীবনে কে বেশী পেলো অথবা কম?
এখন আর ভাবতে পারি না।আশ্চর্য- কেবল মনে হয় তবুও তো তোমার  
অনেক আছে অথচ আমার থেকেও কি যেন নেই, এ কেমন হার জিতের খেলা!