সেই ছোট বেলা থেকেই পাহাড়ের সাথে প্রেম আর মাখা মাখি।  
ইটের ভাটার উঁচু মাটির ঢীবীকে পাহাড় ভেবে ওর চূড়ায় উঠার  
নেশায় কাটত হেমন্তের অলস বিকেল। সেই নেশা হেমন্তের মাকড়সার
জালে ঝুলে থাকা শিশিরের মত বুকের মধ্যে আজও বয়ে বেড়াই।
যখন প্রকৃতই পাহাড় নজরে এলো দেখি আমি পাহাড়ের পাদদেশে  
আর তুমি পাহাড়ের চূড়ায়।


তারপর থেকে পাহাড়ের চূড়ায় উঠার জন্য নিরন্তর আমি কত জনপদ,  
সাগর, পাহাড় পেছনে ফেলে সম্মুখে হাঁটলাম, তবু আজও চূড়ায় উঠা
হল না। আমি আজও এলিফ্যান্ট গ্রাস দু’হাতে সরিয়ে, শক্ত পায়ে মাড়িয়ে
পাহাড়ের গা চিরে উঠছি, কখনও একলা ছাতিম গাছের ছায়ায় বসে
জিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।


দেখি গাছের নীচে কোন আগাছা নেই, সেঁতসেঁতে ঢালু মাটি। সেখানে
অজানা বন্য পশুর পায়ের ছাপ, হজমের বিষ্ঠা, পশমের গন্ধ। তখন
ভাবি আমার মত তাদেরও কি কোন চূড়ায় উঠার স্বপ্ন থাকে, তারাও
কি কাউকে খোঁজে, উদাস হয়ে দু’দন্ড জিরিয়ে নেয় তার ক্লান্ত শরীর!
এ গাছের নির্জন ছায়ার নীচে ফেলে যাওয়া তার নিঃশ্বাস তখনও প্রতিধ্বনিত।  


আমি দূর দীগন্তে দৃষ্টি মেলি, দেখি উদাস দুপুর আমার জন্য নিজেই ক্লান্তির
অবসাদ খুঁজছে, দেখি দু’একটা দলছুটো চিল উড়ছে দূর আকাশে, অথচ
চূড়ার জন্য নেই তার কোন আকর্ষণ, নেই বিরহ ভাবনা। সে যে চূড়ার
অনেক উর্দ্ধে, তাই তার নামার কষ্ট নেই ঠিক তোমার মত। কেবল যে চূড়া
ছোঁয়নি তার কাছে চূড়ায় উঠার স্বপ্ন থেকে যায় পায়ের ধাপ থেকে ধাপে
যদি না তার পদক্ষেপ হয় অভিষ্ট প্রতিজ্ঞার অংশ। তোমাকে ছোঁবই আমি।