ফাগুনের আগুন ঝরা দিন যেন যৌবনেই দোল খায় বেশী।
আসলে যৌবনে কী-না দোল খায়, কী-না মানায় বেশী বেশী।
আন্দোলন, সংগ্রাম, যুদ্ধ, প্রেম-ভালোবাসা, মান-অভিমান,
গান, মেশিনগান সবই মানিয়ে যায়। তাইত মনে হয় ফাগুন যেন
যৌবনেরই আর এক নাম।  


অথচ আজ বার্ধক্যে এসে ফাগুন কেমন যেন দ্বী-গুন ম্রিয়মাণ
এক মাস হয়ে ঢিলা শরীরে জড়ায়। ঋতু পরিবর্তন, আবহাওয়া পরিবর্তন,
কৃষ্ণচূড়া আর শিমুল গাছের ফাঁক গলে সেই চেনা কোকিলের ডাক,
ধূলো উড়ানো ফুরফুরে দমকা দখিন হাওয়া, পাতা ঝরা দিন, এ সব আর
ভাল লাগে না। এখন বসন্ত তাই বাড়ন্ত উদ্বেগ আর উদাসীনতা।


তবুও অভ্যাসগত এখনও যৌবনকে খুঁজে বেড়াই রমণীর খোঁপায় গুঁজা
গাঁদা ফুলের মধ্যে, খুঁজে বেড়াই রমনা বটমূলে বাসন্তি মেলার কোলাহলে,
খুঁজে বেড়াই আম্রমুকুল আর কচি সবুজ পাতার মাধ্যে। কখনও খুঁজে ফিরি
যুগলবন্দী অভিসারিনীর সলজ্জ হাসির মধ্যে। কিন্তু কিছুতেই ফিরে পাই না
বিগত সে ফাগুনকে, ফিরে পাই না সেই যৌবনকে।


তাই ফাগুনের আগুন নিদারুন কষ্ট হোয়ে পোড়ায় এ শরীর আর মনকে।
ম্যাজ ম্যাজ করে সারা অঙ্গ, খাঁ খাঁ করে মরু মন, টন টন করে ব্যথা বেদনা
হাতে-পায়ে, মাথায়-গায়ে। শীতের ঠান্ডা থেকে হঠাৎ গ্রীষ্মের গরমের
সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সমস্ত শরীর যেন করে বিদ্রোহ। তবুও তো
মানতেই হয় এখন ফাগুনে বসন্ত, শ্বাশত যৌবনের দিন।