কবিতার বোধআত্মার দ্যাতনা কতটুকু স্পর্শ করলে চোখের পাতা গড়িয়ে
জল নামে! তা তুমি বোঝো না বলেই আমার চোখের জল  সংক্রমন
করে না তোমার পাষান হৃদয়কে। অথচ তুমি তো ছিলে আমার কাছে
জীবন্ত কবিতার মত। তাই তো তোমার দেয়া আঘাত, অবহেলা, প্রেম,
ভালবাসা, সুখ, দুঃখ সব কিছুতেই আমার বিশ্বসিত মন উপড় হয়ে থাকতো
গভীর প্রাপ্তিতে। ইচ্ছে করলেও চোখের জল কখনই মানত না বাধা।
তুমি তা কোন দিন বুঝেও তবু বুঝলে না।


ফুটন্ত সুর্যের তাপ কতটুকু ধারণ করলে বুকে, চাঁদের থালা থেকে তবুও
জ্যাৎস্নার নরম আলো ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর আকাশে? তা তুমি অনুভব
করো না বলেই তুমি বোঝো না কেন এত আঁধারকে ভালবাসি আমি।
অথচ তুমি তো ছিলে আমার কাছে লজ্জা নিবারণের সমৃদ্ধ রাত্রি। তাই তো
তোমার উদাসীনতা, নির্লিপ্ততা, উপেক্ষা, অকারণ অভিযোগ, মৌনতা,
সৃষ্টি শিহরণ সব কিছুতেই আমার প্রগাঢ় অদৃশ্য টান উচাটন হয়ে থাকত
তোমাকে হৃদয় বেষ্টনিতে পেতে। ইচ্ছে করলেও কখনই থাকা যেত না দূরে।
তুমি তা অনুভব করলে না কোন দিনও একটিবার।  


কতটুকু জলকণা মেঘের অঞ্জলিতে পুঞ্জীভূত হলে বৃষ্টি স্নাত হয় গ্রীষ্মে
রোদপোড়া তপ্ত ধরণী? কতটুকু উষ্ণতা আর জলবাষ্পের ছোঁয়া পেলে
বীজে ঘুমন্ত প্রান মাটি ফুঁড়ে উঁকি দেয় খোলা আকাশে? মোহনায় কতটুকু
জল জমলে শেষ হয় নদীর কান্না? কতটুকু ধোঁয়া আর অভিতপ্ত ছাই এবং
গলিত অগ্নি লাভার উদগিরণ হলে আগ্নেয়গিরির হয় মৃত্যু? আমার বুকে
সাগরসম জলের গভীরে আগ্নেয়গিরির উন্মত্ততায় যে নগ্ন সুনামি, তার
প্রকান্ড ঢেউয়ে তুমি একটিবারও হারালে না। তাইত এখনও ভাবি-  
কতটুকু বল আর কতটুকু নিজেকে ভেঙ্গে আবার গড়লে না ফেরার দেশ
থেকে তুমি একটিবারের জন্য হলেও বুঝতে আমার সকল ভালবাসা ছিল
কেবল তোমার জন্য।