আমার জানালার গ্রীল ধরে আজ জ্যৈষ্ঠের বৃষ্টি ধোয়া
রোদ উঁকি দিয়ে গেছে। আমি তখন ছিলাম নিদ্রা মগ্ন।
জেগে দেখি পথ চোরা রৌদ্রের এতটুকু দ্বীধা নেই আমার
শয়ন কক্ষে প্রবেশের। বরং তোমার মতই সে যেন তুমি
হয়ে অধিকারে নিয়েছে আমার সঙ্গীহীন বিছানা।


বিকেলের ঘুম প্রায় ভুলেই গেছিলাম নাগরিক জীবনে।
আর সে যদি হয় সাপ্তাহিক বন্ধের দিন- তাহলে সেদিন
দাপ্তরিক কাজের চেয়েও ব্যাস্ততা এতটাই যে- তখন মনে হয়
জীবন মানে কাজ আর কেবল কাজ, ছুটি যেন একবারের
জন্যই অপেক্ষা করে আছে। তাই স্বার্থপরের মতই একটু
সুখের আশায় হঠাৎ হয়েছিলাম সংসার ত্যাগি।


অথচ গ্রাম্য এই পরিবেশে এখন আমি একা ভীষন একা।
সঙ্গী বলতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বিকেলের ঘুম, সাহিত্যের পাতা,
আলো-ছায়ার বিকেল, বাদুড় ব্যাস্ত আঁধারী সন্ধ্যা, মেঘ কালো
অন্ধকার রাত, জোনাকী পোকার নাচন, শুক্ল পক্ষের বেহায়া চাঁদ।
তারপর আবার একটি নতুন সকাল।


তবু মনে হয়েছে এর মাঝেই তুমি বার বার কখনও স্বপ্ন হোয়ে,
কখনও বিকেলের আলো হোয়ে, কখনও রাতের আঁধার হোয়ে,
কখনও নির্জনতার স্পর্শ হোয়ে, আমায় ভাসিয়েছ কবিতা আর
ভালোবাসার ছন্দে এবং গন্ধে। যেখানে তুমি দূরে থেকেও আমার
সারাটা শরীর ছিলে লেপ্টে।


আমি বার বার তাই আজ জানালার ওপারে আলোকোজ্জ্বল
পৃথিবীর দিকে চোখ মেলে দিয়ে উঁকি দিয়েছি তোমার বুকের গভীরে,
দেখেছি সেখানে সত্যিই কেবল আমারই বাস,  আমারই অস্তিত্ব
আর শিহরণ। অথচ তোমাকে আর তোমার সংসার ভুলতে চেয়ে
কি ভুলটাই না করে বসে আছি।