মনে হয় এইত সেদিন, সবে দুপুর গড়িয়েছে,
মা-বাবা আলস্য ভাতঘুমে। সেটাই ছিল দুরন্ত
শৈশবের সহজাত সুজোগ মা’র ঝাঁটার কাঠি
চুরি করা, বাবার দ্বারা সদ্য পাঠ সমাপ্ত সকালের
পত্রিকার কাগজ কেটে একটা ঘুড়ি, গোলা ঘরের
অন্ধকার কোনায় সযত্নে লুকিয়ে রাখা নাটাইয়ের
সন্ধান, তারপর দে লম্বা দৌড় খোলা মাঠের
রোদেলা দ্বিপ্রহর বাতাসে।


এখন সেই কাগজের ঘুড়ি ছাপিয়ে আমার জীবন ঘুড়ি  
মিলায় সুদূর দিগন্তে। এ ঘুড়িতে কাঠি লাগে না,
সুতা লাগে না, নাটাই লাগে না। তবুও উড়তে থাকে
আর উড়তে থাকে। কখনও পূর্ব থেকে পশ্চিমের
বাতাসে আবার কখনও উত্তর থেকে দক্ষিণের বাতাসে।
এর সুতার টান থাকে অদৃশ্যের হাতে। ঘুড়ি লাট খায়,
পাক খায়, বাতাসে ভাসে অদৃশ্য ইচ্ছায়।


আমি এখন সেই ঘুড়ির সাথেই ঝুলে থাকি গ্রীষ্ম,
বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্তের বার মাস।
এখন মাঠ লাগে না, মৌসুমি বাতাস লাগে না, মা-বাবার
তন্দ্রামগ্ন ভাতঘুম লাগে না। খুঁজতে হয় না মা’র ঝাঁটার
অবস্থান। সব কিছুতেই কেমন আগাছা আর শ্যাওলা
জন্মেছে। পুরনো গুমোট গন্ধে হাওয়ারা করছে খেলা।
আর আমি ভেসে ভেসে যাচ্ছি অচেনা অদৃশ্যে টানে।