অসময়ের বৃষ্টিতে মরা গাঙ্গে
এপারে নদীর পাড় ভাঙ্গে,
ঘরের ভিটে যায় সরে সরে
ভেতরে সাহস কেমন যাচ্ছে মরে।


আবার কি হব ভিটে ছাড়া
এমনই এক হতচ্ছাড়া
এ জীবন আমার
চেয়ে দেখি আমি নদীর ওপার
তোমার জীবনে লেগেছে ঢেউ,
আমিনা, এখন মনে হয় অন্য কেউ
হয়ত বাঁধছে স্বপ্ন তোমার বুকে,
তার উজ্জ্বলতা দেখি তোমার চোখে মুখে।


কেননা তোমার বিস্তৃত অক্ষত পাড়ে
উজানের ভারী জল গড়ে গড়ে
বাঁধছে নতুন চর,
অথচ ভাঙছে আমার ঘর।
এপারে বসে ওপারের চঞ্চলতা দেখি,
শরীর মনে শংকা মাখি
ভাবি তোমাকে নিয়ে আমার যে ভালোবাসা,
এখন কেমন যেন লাগছে তা ভাসা ভাসা।


ঘর বাড়ি নেই নেই বাস্তু ভিটে
জীবন উঠেছে এখন শ্রম বেচা হাটে।
এখন যেন স্বপ্ন দেখাও পাপ,
তবুও মনে বিশ্বাস ছড়ানো উত্তাপ।
আমি মানি নিষ্ঠুর বাস্তবতা,
আজ যে চর ওপারে জাগছে তা
আজকের মতই আবার কোন একদিন
এ পাড়ের মতই অচেনা বন্যায় হবে বিলীন।
এইত স্রোতস্বিনী নদীর খেলা,
সকালে সম্ভার দেখি বিরান বিকাল বেলা।


সেদিনও আমি থাকব পাড়ে বসে
সকাল সন্ধ্যা এসে।
দূরে অথৈ জলে চোখ মেলে,
দেখব তোমার নৌকা আসছে জল ঠেলে।
যদি মনে পড়ে আমার কথা
আমি ভুলে গিয়ে সকল দুঃখ ব্যাথা
তোমাকে আপন করে কাছে পেতে
নতুন প্রানের গন্ধে মেতে-
বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখি আমার নদী,
সে নদীর বন্যায় আমি যতই কাঁদি
তাতে পাড় ভাঙ্গে না হয়ত ভাঙ্গে মন,
তবুও কারও জন্য ভালোবাসার ওজন
স্বর্ণের ভরির চেয়েও হয় খাঁটি,
তাই এখনও আঁকড়ে থাকে জ্ঞাতি ভিটের মাটি।


তোমার জন্য আজও থাকি প্রতিক্ষায়,
আগের মতই তোমার ভালবাসায়
আজও আমি অনুক্ষণ মত্ত,
ভালোবাসায় থাকতে হয় না কোন শর্ত।
তাই শুধু চাই ছোট্ট একটি সুখের ঘর,
চাই একটি স্রোতস্বিনী নদীর একটিই চর।