আমি জানি কতটুকু তেল পুড়লে সারারাত আলো দেয়
প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ। কতটুকু রাত্রি হলে বাঁশ বাগানের অন্ধকারে
জোনাকীর আলোয় আঁকা হয় বিমূর্ত ভালোবাসার ছবি। আমি জানি
কতটুকু আঁধার হলে তারার আকাশে দেখা দেয় ঝরে পড়া অভিমানি
তারা। অথবা জ্যোৎস্নাকে কতটুকু ভালবাসলে গন্ধ ছড়িয়ে ঝড়ে পড়ে
শরতের শিউলি ফুল।  


আলোহীন ঘরের ছায়া প্রলম্বিত হওয়ার অপেক্ষা অবধি
তোমার আঙ্গিনায় কেবল পুষে রাখতে পার দুপুর গড়ানো রোদকে।
সন্ধ্যার আলোয় তুমি মূর্হ্যমান বিমূর্ষ হও একাকিত্বের নস্টালজিক
রোগে। আমি জানি জীবনে পাওয়া আর না পাওয়ার হিসাব মেলানো
ভাবনারা কতটুকু ক্লান্ত হলে শরীর ভেঙ্গে আসে যাত্রা ঘুম।
যেখানে পরিবেশ হয় উপেক্ষিত।


আমি জানি উত্তরের কৈলাশ থেকে কতটুকু জল গড়ালে ভাটিতে
গিয়ে শান্ত হয় নদী সাগরে মিশে মিশে। সেই চলার পথে নদী বুকে
নিয়ে বেড়ায় নুড়ির সমাহার, বালুর আধার, পাড় ভাঙ্গা মানুষের চোখের
জল আর অধুনা সভ্যতার জঞ্জাল। তবুও সাগরের উত্তাল গর্জনের
আহ্বানে তাকে কি  থামাতে পারে পর্বতের পিছু ডাক আর
কল্লোলিত মায়া?


আমি জানি কতটুকু মেঘ আকাশে জমলে ঝড়ো বাতাসে ভাসে
বৃষ্টির গন্ধ, তাল গাছে ঝুলে থাকা বাবুই পাখির বাসা প্রখর বৃষ্টি
বিমূখ হয় নীরব কলরবে। অথচ বাসা আর ভালোবাসা নিয়ে তুমি
সম্পর্কের কাছে হেরে গেলেও আমি তো জানি প্রেমের আগুনে
কতটুকু পুড়ে গেলে ভালোবাসার সম্পর্ক হয় খাঁটি সোনা।
যেখানে পতিপত্তি নিতান্তই ছলনা।


মান অভিমান নয়, সৌজন্য কিংবা দয়া নয়, আমি জানি কতটুকু
ঘাম ঝরলে বেদাগি জমিনও লাঙ্গলের ফলার আঘাতে উত্তেজিত হয়
ফসলের আগাম বার্তায়। কতটুকু স্পর্শ করলে অথবা কতটুকু দুর্বলতা
আড়াল করলে যন্ত্রনা প্রশমিত মন ধরা দেয় বুকের জমিনে উত্তরসুরির
সুখ কান্না- আমি তা জানি। অথচ এত জেনেও-  
কেবল জানা হল না এই তুমিটাকে।