আমি তোমার বাসবদত্তা
অজিত কুমার কর


তখন গোধূলি-সন্ধ্যা
ফাল্গুন শেষ চৈত্র এসেছে সমীরণ বিহু-ছন্দা।
আম্রকাননে ধরেছে মুকুল
ঝুরুঝুরু ঝরে শেফালি-বকুল
ফুলসৌরভে মধুপ আকুল, ফুটেছে রজনিগন্ধা।


পল্লির পথে ঘনায় আঁধার ঝিল্লিরা গানে মত্ত
কুলবধূ সাঁঝে প্রণাম জানায়
করজোড়ে বসে শুধু কৃপা চায়
শঙ্খ বাজিয়ে গৃহে ফিরে যায় শ্রীহরির বড় ভক্ত।


লাঠিখানি হাতে নীরব নিশীথে পেয়েছ চলায় ছন্দ
পাশে নীপবনে কোয়েলার সুর
রিনিঝিনি বাজে কাহার নূপুর
পড়ে আছি পথে আমি যে আতুর সমীরণ মৃদুমন্দ।


তোমার কোমল স্পর্শ পেয়েছি সে আমার সৌভাগ্য
বুঝে গেলে তুমি কে আমি তোমার
দেখেছ কোথাও আনন আমার
নবযৌবন এক ললনার আপনার বৈরাগ্য।


সেদিন ডেকেছি আলয়ে আমার রাজি নও উপগুপ্ত
বলেছিলে তুমি, 'যাইব আপনি
সময় আসেনি, ও প্রিয়ে এখনি
আমার মননে রূপসি সজনি বাসনা র'বে না সুপ্ত'।


'চিনেছি তোমারে ভুলি নাই আমি তুমি তো বাসবদত্তা
সেদিন তোমায় দিয়েছি ফিরায়ে
কত আভরণ ছিল ওই গা'য়ে
শিঞ্জিনী ছিল আলক্ত পা'য়ে শ্রাবণে মোহিনী সত্তা।'


পেয়েছি তোমার অপার করুণা ভরে গেছে এই বক্ষ
মারিগুটিকায় ভরা এ শরীর
সন্ন্যাসী বর, ও' নয়নে নীর
কত সুখ মনে এই অভাগীর এ'রাতি শুক্লপক্ষ।


প্রলেপ লাগালে আমার শরীরে করেছো কতনা যত্ন
তুলে নিলে তুমি সযতনে কোলে
সান্ত্বনা দিলেন প্রিয়কথা ব'লে
অবহেলাভরে যাও নাই চলে তুমি এক মহারত্ন।


এ' প্রেম কখনো হবে না মলিন স্মরণ করিবে বিশ্ব
অতি সাধারণ আমি এক নটী
তুমি মহীয়ান মহা ধূর্যটি
ক'রে নিলে তুমি অতি সমাদরে আমারে তোমার শিষ্য।


© অজিত কুমার কর